চিঠি বিরহ (৩)
       ___শান্ত চৌধুরী
প্রিয় মৌমিতা,
কদিন হলো তোমার সাথে যোগাযোগ নেই। কেমন আছো তুমি? স্বামী সুখের সংসার আর নতুন পরিবেশ, সব মিলিয়ে ভালোই আছো? তোমার বাড়ির উঠোনের বকুল গাছটি আজো আছে? নাকি আমার মত অবহেলা অনাদরে মিলিয়ে গেছে? বকুলের ঘ্রাণ আজো আমায় আন্দোলিত করে, তোমায় খুঁজে যাই বকুলের ঘ্রাণে,মনে হয় তোমার শরীরী ঘ্রাণ, কতরাত ভোর হয়েছে বকুলের ছায়ায়।ছায়া ঘেরা শিরিষ গাছের ডালে কি বনমালীর দল কিচিরমিচির ডাকে? নাকি ওরাও তোমার মতো অভিমানে দূরের কোন যাত্রী হয়েছে।অথচ ওরাই ছিলো সময় অসময়ে।অন্ধকারে জোনাক গুলো কি এখন দল বেদে আসে উঠোনে,নাকি সোডিয়ামের উছল আলোয় হারিয়ে গেছে ?কতরাত ওরা আমাদের সঙ্গী ছিল তার হিসেব নেই।প্রভাতের সোনালী স্নিগ্ধ শিতল উষালগ্নে তোমার সাথে দেখা হতো শিউলি তলায়, প্রাণের তৃষ্ণার জলে ডুবে যেতাম অনাবিল উচ্ছ্বাসে। অজর বৃষ্টিজলে কদমের পাপড়ী ভাসিয়ে পুকুর জলে, ডাহুকের মতো ভিজেছি কাকভেজা। অথচ কদিন হলো, তুমি নিমিশেই সব ভুলেছো। যে তুমি আমাকে ছাড়া বাঁচবেনা বলে চোখের জলে বুক ভাসিয়েছো, সবি ছিলো আমার সাথে ছলনা,  আমি তোমাকে ছাড়া নিঃশব্দ বেঁচে আছি। রঙহীন স্বপ্নের ধূসরে মিলিয়ে গেছি। জীবনের বিবর্ণ সময়ের স্রোতে।
সময় অসময়ে জীবন নগর স্টেশন থেমে নেই, দুঃখের স্মৃতিভ্রম সৌজন্য শেষ প্রান্তিকযাত্রী আমি অনাদি কালের সাক্ষী।