চলতে চলতে গিয়েছিনু মোরা আলোকিত রাতের আধারে
ডাবলিন শহরের মাঝ দিয়ে চলা লিফি নদীটির এপারে
সারি সারি প্রতিমা দেখে উঠে, শিউরে বলেছিলে, আহারে
জীর্ন, শীর্ন প্রতিমাগুলো জীবন্ত এ জাতি, যেনো দাড়িয়ে আছে বাহারে।


ঐ প্রতিমাগুলো তপ্ত প্রাণে নাগিন বাজিয়ে কলরোলে চায় জাগাতে
ওরা গান গায় দুখে, কথা বলে শোকে, কাঁদে যে অঝোর ধারাতে
সাতশ বছরের ব্রিটিশ শাসন, বেনিয়া শোষণ, তপ্ত ব্যাথার জ্বালাতে
দুটো ভাগ করে, দিয়ে গেছে দেশ, ভাষাকে করেছে জব্দ
ধর্মের সাথে ধর্ম যুদ্ধ, রক্ত হোলিতে মত্ত মানুষ, নাচিছে অবাধ ধারাতে।


১৮৪৫ থেকে ৫১ সাল, খাবার ছিলোনা জঠরে ওদের,
চেয়েছিলো দেশ ছেড়ে সবে পালাতে
২০ লাখ জীবন মরেও মরেনি জেগে আছে দিনের আলোতে
আরও ২০ লাখ নগ্ন তিমিরে নদী বেয়ে চলে সাগরে
তরণী ওদের বেয়ে নিয়ে চলে অতলান্তিকের ওপারে।।


মন্বন্তর এসে, হেনেছিলো বান, সুখ অসুখের বারাতে
খেতে না পেয়ে শীর্ন, জীর্ন দেহখানি ওরা, না যেনো পারে বহিতে
আলুতে জীবন, পোকায় খেয়েছে, ফসল মরেছে মাটিতে
তাইতো জাতি লুটিয়ে মরেছে, খাবার ছিলোনা ললাটে
মৃত্যু এসে টুঁটি চেপে ধরে অভাগা জাতির করোটে।।


এইত এ জাতির জীবনাতিহাস, লিখা আছে, বেদনার জলধারাতে
আজো যে ওরা কাঁদছে নিশীথে, দুঃখ শোকের মালাতে
বন্ধু তুমি, দেখতে কি চাও, মিল খুঁজে নাও, স্বজাতির সাথে
যদি পারো তুমি ইতিহাসের পাতা মিলাতে।।


একই জাতি সেই ব্রিটিশ বেনিয়া, ধূর্ত শৃগাল, লক্ষ বিশাল
দুইশ বছর শোষণ করেছে স্বদেশ আমার, উমদা ত্রিগাল
বাঙালীর দেশ পূরব ও পশ্চিম করেছে দু'ভাগ নিমেষে
ধর্ম দিয়ে বিভাজে স্বদেশ, রক্ত হোলীতে খেলেছে বাঙাল আবেশে
দুর্ভিক্ষ, বারে বারে এসে ধরা দিয়ে গেছে, মন্বন্তর জাতির কপালে
তেতাল্লিশে আর চুয়াত্তুরে এসে কেড়ে নিয়ে গেছে লক্ষ জীবন সরোষে!


এসেছে সময় সচেতন হও জাতি
প্রতিমা ত নয় মূর্ত স্বদেশ, ইতিহাস, সজীব বাতি
চোখ খুলে দেখো কোথা দিয়ে বয়, ভূবন জাগানো রাতি
মন খুলে ধরো, গাও কিছু গান, মূর্ত জীবন যাচি।।


(This is poem is written based on the history of Famine, British occupation and religious conflict of Ireland. Attached picture shows statues on the side of the river Lifey expressing the mass immigration during Potato famine)
https://goo.gl/images/l3S7fp