মহামারী
৪২                                                                        ২০/০৪/২০২০


জানি না আসবে কবে সুদিন
মহামারী নেবে তুমি বিদায়, চিরতরে
জানি না দেখবো কবে সেদিন,
কর্মহীন মানুষগুলো, আবার কাজ খুঁজে পাবে !
জানি না শুনবো কবে –
নিঃসম্বল খড়কুটো পাবে খুঁজে
জানি না কবে করতে পারবো, বন্ধুত্বের আলিঙ্গন;
করমর্দনে বাড়াবো সৌহার্দের হাত মেল-বন্ধন I
জানি না, কত নিষ্পাপ মানুষের বলিদানে
থামবে তোমার ঔদ্ধত্য রথ I
দুর্গম শৈল পেরিয়ে,
শুরু হবে আমাদের মসৃণ যাত্রাপথ গতিপথ I


তোমার জন্য, ক্ষমতার অহংকার হারিয়েছে ভ্রুকুটি
সব দুষ্টু কাজ, আজ নিয়েছে ছুটি I
নেশার পৃথিবীটা হঠাৎ হয়েছে মুক্ত,
অবাধ্য সন্তান আজ ঘরে অবরুদ্ধ I
শিক্ষা-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে আজ শৃঙ্খলিত;
পরিচ্ছন্নতা, আজ কায়মনোবাক্যে সবে অবগত I
তোমার জন্য গ্রহ-নক্ষত্র শোনে না আজ, ছোট্ট  রত্নের বারণ
জরিবুটি, রাশিফল, তন্ত্র-মন্ত্র সবই যেন বিফল I
দ্বন্দ্ব, হিংসা, বিদ্বেষ  হারিয়ে সবে, একই সারিতে সামিল
খাদ্য, পথ্যের অন্বেষণে, যেন এক অভূতপূর্ব মিল I


বদ্ধ ঘরে অনেকদিন পরে,
কঠিন মুখ, মুখোমুখি সারাদিন;
আড়মোড়া ভোরে ফিরবে কি সে;
হবে আগের মতই রঙিন !
সীমারেখা পাশবালিশটা বেমানান যত
হারানো মন পদে-পদে, অসংযত, ইতস্তত I
ঘরে-বাইরের সম্পর্ক ভুলে, ঘরে ফিরল প্রাণ I
সীমাহীন অবসর, হন্যে অন্বেষণ
একজিস্ট নম্বরটার, যদি বা, খোঁজ দেয় বৃদ্ধাশ্রমের I


কোকিলের কুহু, ময়নার হরবোলা
এসেছে উঠে সমুদ্রমন্থনে I
বিষাক্ত গাঙের জল হয়েছে পানীয়;
পৃথিবীর আয়ু গেছে বেড়ে I


আসো তুমি ফি-শতাব্দী
ভিন্ন রূপে, ভিন্ন নামে কত মহামারী I
তবুও কি মানুষ হয় সংযমী, সংশোধনী ?
জানিনা শাপমোচন হবে কবে –
সভ্যতার, শ্মশান নীরবতা কবে ভঙ্গ হবে I
দূষণহীন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছাড়বে কখন হাঁফ;
বিজ্ঞানের মতই তুমি করোনা,
প্রশ্ন রেখে গেলে -
আশীর্বাদ-না-অভিশাপ !