একদিন, পত্রলেখার দেখা হলো মেঘপিওনের সাথে ।
পত্রলেখা: এই যে,মুখ ঘুরিয়ে চলে যাচ্ছ যে বড় ।
মেঘপিওন: দাঁড়াও না লক্ষীটি,একটু সবুর কর ।
পত্রলেখা: সবুর ! সবুর করে করে তো অনেক মেওয়া ফলালাম গো,সেসব পাকলো,রেঁধে বেড়ে খেয়েও নিলাম ।
মেঘপিওন : আর বোলনা,এই মাত্র বিদেশ থেকে এলাম ।
পত্রলেখা : বিদেশ ! সে আবার কেমন দেখতে গো,বলো না,বলোনা পিওন দাদা ।
মেঘপিওন : কি বলবো দিদিভাই,সে এক মস্ত গোলকধাঁধা!
বড় বড় রাস্তা সাপের মতন চলে,
মানুষগুলো বুঝিনা কিযে কথা বলে-
সারাদিন প্যান্প্যানে বৃষ্টির ঝক্কি ।
উত্সব পড়ে যায়,যদি রোদ ওঠে এক রত্তি ।
পত্রলেখা : কি বলছো,বিদেশে কেও তোমায় ভালোবাসেনা ?
চিরকুটে চিঠি লিখে হাতে দিতে আসেনা ?
মেঘপিওন : না গো দিদিভাই,ওরা বড় ব্যস্ত ।
সারাদিন কানে গোঁজা কি যে সমস্ত
ছোট ছোট বাক্স নিয়ে আঙ্গুলেতে টিপ টাপ ।
মুখে কোন কথা নাই,বললেই" শাট আপ ।"
পত্রলেখা : ভারী মজা তো,আরো কিছু বলো শুনি ।
মেঘপিওন : না গো,এদিকে হয়নি চাষ,যেতে হবে এখুনি ।
মাঠ ঘাট ফুটিফাটা,অনেক বৃষ্টি চাই।
কাল হবে বাকি কথা,এইবেলা উড়ে যাই ।
পত্রলেখা :যেতে পারো,আগে বলো,চিঠিখানা দিয়েছ ?
উত্তরের চিঠি খানা মনে করে নিয়েছ ?
দেখো দেখি ঝুলি খুলে,আমার ঠিকানা লেখা খাম আছে?
নেই কেন ? চিঠি বুঝি যায়নি মায়ের কাছে ?
বলোনা পিওন দাদা,মাকে খুঁজে পাওনি ?
আমার অসুখের খবর তাকে বুঝি দাওনি ?
কতদিন ধরে এই ছোট ঘরে বন্দি ।
এইবারে বুঝে গেছি তোমাদের ফন্দি।
চিঠি নয়,একেবারে নিয়ে যাবে আমাকে ।
মা বুঝি এইবারে বলে দিলো তোমাকে ?
কবে গো পিওন দাদা,কবে হবে সে সময়?
মার কাছে যাব আমি,এ আমার দেশ নয় ।