আসলে সে ছিল মৌমাছিবর্গের । যাকে অবুঝ কিরাত
হঠাৎ আহত করে নিয়ে এল অজ্ঞান রাত্রির
তলায়, খড়ের শয্যা পেতে তার দেহ থেকে তির
ধীরে তুলে নিল যেই ভেসে উঠলো কম্পিত, বিরাট
আফ্রিকা, শীতের রাত্রি, ঘুমন্ত মাস্তুল, দীর্ঘ ডেক....
তারো আগে উড়ে যায় বাতাসে নির্ভার ব্যালকনি
আরো ভারহীন দেহ; কী যে হাল্কা ! সমস্ত অর্পণই
তখন উল্কায় ছিল...মনে আছে সেবার প্রত্যেক
বন্ধুরা একসঙ্গে ছুটি কাটালে অক্সফোর্ড থেকে কাছে
এক সহপাঠিনীর নিবিড় বাড়িতে; আর কেক
কাটা হলো ঘিরে বসে, মোমবাতি,....'ইয়র্কশায়ারে
খামার বানাবো ছোট্ট; লাল বাড়ি; ক্রীসমাস গাছে
খেলনা জাহাজের ভোঁ; সাদা বুড়ো, সাদা শিশুরাও...'


লাজুক ছাত্রীর চোখ নীচু হয়ে এল চুপিসারে
শিশুর প্রসঙ্গে এসে...সঙ্গে সঙ্গে সত্যি জাহাজের
তীক্ষ্ণ বাঁশী বেজে উঠলো : উঠে পড়ো, নোঙর ওঠাও !
মুহূর্তে আফ্রিকা, রাত্রি, জাফরিকাটা জানালায় কাদের
অদ্ভুত ভুতুড়ে শব্দ, নেমেছে মাস্তুলে চাঁদ....ঠিক
তখনই কিরাত তাকে তিনদিক থেকে বিঁধে এনে
নিঃসাড় শরীরখানি শুইয়েছে খড়ে; ত্রিমাত্রিক
আঘাত দেহের থেকে তুলে নিল যেই, হাওয়া ভেঙে
মৌমাছি আকাশে উঠলো; আর সে-কুয়াশা, ওকে টেনে
নিয়েছে নিজের মধ্যে,... ভেবে দ্যাখো কিরাত, কি জেনে
তির নিয়েছিলে হাতে ?...হাওয়া আসছে কয়েক শ বছর থেমে থেমে
কুয়াশারা সরে এলো, কে যেন নামছে, চুপ, খড়ে, বেথেলহেমে....


(কাব্যগ্রন্থঃ ক্রীসমাস ও শীতের সনেটগুচ্ছ, ১৯৭৭)