আমরা যেদিন আগুনের নদী থেকে
তুলে আনলাম মা’র ভেসে-যাওয়া দেহ
সারা গা জ্বলছে, বোন তোর মনে আছে
প্রতিবেশীদের চোখে ছিল সন্দেহ


দীর্ঘ চঞ্চু, রোঁয়া-ওঠা ঘাড় তুলে
এগিয়ে এসেছে অভিজ্ঞ মোড়লেরা
বলেছে, এ সভা বিধান দিচ্ছে শোনো
দাহ করবার অধিকারী নয় এরা


সেই রাত্রেই পালিয়েছি গ্রাম ছেড়ে
কাঁধে মা’র দেহ, উপরে জ্বলছে চাঁদ
পথে পড়েছিল বিষাক্ত জলাভূমি
পথে পড়েছিল চুন লবণের খাদ


আমার আঙুল খসে গেছে, তোর বুক
শুকিয়ে গিয়েছে তীব্র চুনের ঝাঁঝে
আহার ছিল না, শৌচ ছিল না কারো
আমরা ছিলাম শববহনের কাজে


যে দেশে এলাম,মরা গাছ চারিদিকে
ডাল থেকে ঝোলে মৃতপশুদের ছাল
পৃথিবীর শেষ নদীর কিনারে এসে
নামিয়েছি আজ জননীর কংকাল


বোন তোকে বলি, এ অস্থি পোড়াবো না
গাছের কোটরে রেখে যাবো এই হাড়
আমরা শিখি নি । পরে যারা আছে তারা
তারা শিখবে না এর ঠিক ব্যবহার?


সারা গায়ে আজ ছত্রাক আমাদের
চোখ নেই, শুধু কোটর জ্বলছে ক্ষোভে
আমি ভুলে গেছি পুরুষ ছিলাম কিনা
তোর মনে নেই ঋতু থেমে গেছে কবে


পূবদিকে সাদা করোটি রঙের আলো
পিছনে নামছে সন্ধ্যার মতো ঘোর
পৃথিবীর শেষ শ্মশানের মাঝখানে
বসে আছি শুধু দুই মৃতদেহ চোর।