কবিতাটি পাঠ করার সুবিধার্থে ক:ফিমেল/খ:মেল


         ক: শোন একটা কথা বলি
               রাগ করবে নাতো-
       খ: আরে আরে রাগ করবো কেন?
                বলই না কি বলবে!
        ক: তুমি মিতাকে বিয়ে কর;
              বেশ মানাবে তোমাদের ...
               খ: আহ! হা কেন তুমি
              এসব ভাবো বলো তো ...
      ক: আমার আশাহীন জীবনের পাশে
         তোমাকে বড় অসহায় মনে হয়..
          মনে হয় কিই বা আছে আমার ৷
                  খ: না না লক্ষীটি
           ওভাবে বলবে না বলো,
              এই আমি বেশ আছি ৷
     ক: জানো মিতা তোমাকে ভীষণ ভালবাসে ৷
             ওর মুখেই শুনেছি তোমার কথা;
    যখন নদীর তীরে স্যাত স্যাতে বালির উপর
               দুজনে হাত ধরে হাটতাম;
                    ও বলতো জানিস
         এ গাঁয়ে একজন ভদ্রলোক এসেছেন,
                    নাম জানি না;
               মায়াময় চোখের চাহনী,
         মিষ্টি ভাষায় গুনে গুনে কথা বলে ৷
                     ভীষণ লাজুক...
       ওর মুখে শুনতে বেশ লাগতো কথাগুলি ৷
                  খ: হয়েছে হয়েছে
            আর বলতে হবে না ওভাবে ৷
      ক: আরে আরে শুনই না অনেক কথা:
          ও বলতো তোমার বলিষ্ট কন্ঠস্বর
       নির্জন দ্বীপে এককী পথ চলতে শেখায়
          আর তোমার পলকহীন চোখের চাহনী
        যেন উত্তাল সমুদ্রের মন মাতানো ঢেউ ৷
             ওর ঠোটের প্রতিটি ভাজে যেন
          তোমার প্রশংসা লেগেইে থাকতো ৷
       খ: তুমি রাখবে এবার অনেক হয়েছে;
        এই নাও তোমার কফি ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে ৷
            ক: বড় ভাল কফি বানাও তুমি,
           এক্কে বারে আমার মনের মতো ৷
                     তুমি খাচ্ছ তো!
                        খ: হুম;    
            ক: মাঝে মাঝে তোমাকে আমার
                     কি মনে হয় জানো?
                        খ: কি?    
            ক: তুমি যদি নীল আকাশ হতে..
                          খ: তাহলে?
                 ক: আমি সাদা মেঘ হয়ে
          তোমার উদার প্রশারিত বুকে আশ্রয় নিতাম ৷
   কখনও কখনও ঈগলের ন্যায় ডানা মেলে ভেসে যেতাম ...
                        খ: আচ্ছা বেশ!
                ক: তোমাকে একটা প্রশ্ন করি?
                             খ: কর!
                  ক: পাথরের কি জীবন আছে?
                       খ: না নেই ৷
               ক: পাথর কি কখনও হালকা হয়?
              খ: ছোট হলে হালকা; বড় হলে ভারী
                        কিন্তু তুমি কেন হঠাৎ
               আবোল তাবোল বকসো বলো তো ..
                     ক: না না ওসব কিছুই নয়;
                  মাঝে মাঝে মনে হয় কি জানো?
               আমি যেন একটা ভিষণ ভারী পাথর;
                 কেবল মাত্র স্থান দখল করে আছি ৷
                 খ: উপমা তুমি থামবে এবার..
                              নইলে...
                          ক: নইলে ...
                    থেমে গেলে কেন বলো?
             খ: নইলে আমি চলে যাব অনেক দূরে
                     তোমার দৃষ্টির আড়ালে ৷
                ক: হা হা হা হাসালে আমায়!
                          খ: হাসছ যে..
                     ক: তুমি তো তাই ৷
            সব সময়ই আমার দৃষ্টির অন্তড়ালে ৷
                  খ: লক্ষীটি ক্ষমা করো প্লিজ,
             না বুঝে আঘাত করেছি তোমায় ৷
                   ক: যাক গে ওসব কথা,
              যার যেটা পাওনা সেটা সে পাবেই,
                 সুমন্ত তুমি আমাকে বাইরের
                 বেলকোনীতে নিয়ে যাবে?
                     বড্ড ইচ্ছে করছে
                 নীল আকোশের আবেশে
       পরন্ত বিকেলের রক্তিম আভায় মিশে যেতে ৷
                        ইচ্ছে করছে
         শিউলী আর হাসনা হেনার সুভাস পেতে ৷
           খ: ঠিক আছে হাতটি ধরো শক্ত করে
                     ফসকে যেওনা কিন্তু ..
                     ক: কেন ভয় কিসের?
                 মৃত্যুর! মৃত্যুই যার অবধারিত
                     তার আবার মৃত্যু ভয়!
                   আমি মৃত্যু ভয় করি না;
                        আমি মরতে চাই ৷
                     এই অন্ধকার পৃথিবীতে
                       আর বাঁচতে চাই না
                        আমি মরতে চাই,
                        আমি মরতে চাই ৷
                      খ : লক্ষীটি আমার,
                    আর নয় অনেক হয়েছে ৷
                     আমি যে আর পারছিনে ৷
                     বড্ড কষ্ট হচ্ছে তোমার ৷
                   ক: শোন, তোমার হাতটি
                  রাখবে একবার আমার হাতে?
                       খ : এই রাখলাম
                      বলো এবার কি বলবে?
                     ক : সুমন্ত,আজ আমি
          অনেক না বলা কথা তোমাকে বলতে চাই
          আমার গোপন হৃদয়ে প্রতিশোধের অগ্নি শিখা
                   স্ফুলিঙ্গ হয়ে কেবলই উড়ছে ৷
                      শুনবে তুমি কথা দাও...
                              খ : বলো!
                           আজ আমি শুনব
                    তোমার সব না বলা কথা
                      ক : নিথর, নিস্তব্ধ,
        স্থির থাকা এ আমি...তোমাকে  বলে যেতে চাই..
                   ঐ নিষ্ঠুর নর পশু গুলো
          যারা আমার দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে চিরতরে,
                   ওদের ছুড়ে দেয়া এসিডে
                ঝলসে গেছে আমার সমস্ত স্বপ্ন..
            আমি থেকে থেকে হয়ে উঠি উন্মাদ!
                           ভয়ঙ্কর!
                আগ্নেয় গিরির গভীর খাদ থেকে
                   উত্খাত হওয়া গলিত লাভা
                    দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে
                     রক্তের প্রতিটি শিরায় ৷
             আমি ভয়ঙ্কর আক্রোশে গর্জে উঠি বার বার        
                         একান্ত নিরবতায়,
                ওদের জন্যে আমার বুকের পাজরে
                জমে আছে রাগ, ঘেন্না, অভিশাপ
              আমি ওদের উদ্দেশ্যে বলে যেতে চাই
                  হে নিষ্ঠুর হিংস্র হায়েনার দল
                            আর কতকাল!
                            আর কতকাল!
         তোরা ক্ষুবরে ক্ষুবরে দেহের মাংস তুলে নিবি?
         কেড়ে নিবি স্বপ্নো বিভোর সহস্র নারীর সম্বল?