কোভিট-১৯ সারা পৃথিবীতে যে সকল বৃদ্ধ বাবা-মা মৃত্যুকালে তাদের ছেলে মেয়েদের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত ছিল, যারা তাদের মৃত্যুকালে ছেলেমেয়ের হাতের শেষ পানিটুকু পান করতে পারেননি এবং তাদের লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে হসপিটালে পরেছিল সেই সমস্ত বাবা-মার আত্মার স্মরণে কবিতাটি।


পথের পাশে অবহেলায় গুনছি দিন মৃত্যুর,
হায়রে আমার সোনা ধন কোথায় গেছিস আজ তুই?


দশ মাস দশ দিন গর্ব করে ধরেছি তোকে পেটে,
আজ তুই অবহেলায় ফেলে গেছিস নার্সিংহোমের গেটে?


অনাহারী হয়েও আমি দিয়েছি গুজে তোর মুখে খাবার,
তুই আমার সর্বস্ব কেড়ে আঘাত দিলি বার বার?


হায়রে আমার নাড়ি কাটা ধন চাঁদেরকণা মানিক রতন ,
আদর সোহাগে আগলে রেখেছি বুকে তার বুঝি এই অধঃপতন?


বাবারে আমার তীব্র জ্বরে পুড়ছি আমি কাঁপছি থর থর,
কোথায় গেলি মানিক সোনা কোথাও মেলেনা দেখা তোর?


কাঁশতে কাঁশতে রক্তক্ষরণ নিঃশ্বাসে মেলেনা শক্তি !
পুত্র আমার মরন কালে এই তোর মাতৃভক্তি?


করোনা আমার কেড়ে নিল জীবন এখন বিদায়ের পালা,
অধমতলে নরাধম আমি পারছিনা সইতে ভব জ্বালা।


মরন বেলায় কত কথা ছিল চেয়েছিলাম তোকে বলতে,
তুই নাকি বংশের একমাত্র প্রদীপ নিভতে দেইনি সলতে।


হায়রে আমার পোড়া কপাল যাবার বেলায় আমি একা,
খোকা খোকা করে কত কাঁদলাম পেলাম না তোর দেখা।


আজ আমি বড় অসহায় মরছি ধুঁকে ধুঁকে,
প্রিয় আমার সোনার ধনেরা থাকিস যেন তোরা সুখে।


করোনা আমায় চিনিয়ে দিল তুই বাবা কত স্বার্থপর,
আদর সোহাগে বড় করেছি দেইনি কখনো চড়-থাপ্পড়।


কত আশা ছিল মরন বেলায় এক ফোঁটা জলে ভেজাবি শুষ্ক গলা,
প্রসব বেদনায় ছটফট করেছি চাইনি কন্যা চেয়েছিলাম পোলা।


আজ আমি শত ক্ষত নিয়ে হাঁটছি মৃত্যু পথে,
যাবার বেলায় বলে যাই বাবা আর হাঁটিসনা কুপথে।


সন্তান আমার বুঝলিনা তুই মায়ের বুকের জ্বালা,
ভিক্ষা করে খাইয়েছি তোকে রাখিনি অনাহারি একবেলা।


সেই সোনা বাবা হয়ে তুই আঘাত দিলে মারে?
কলিজা চিরে কষ্ট বেরোয় এ কথা কই কাহারে?


শূন্য হাতে এসেছিলাম আমি শূন্য হাতেই যাই,
মরন বেলায় একবার বাবা বলনা আমায় বিদায়।