মা আমার কপালে
কালো তিলক এঁকে দিবে না!!


এই দেখ চুপটি করে বসে আছি
কালো তিলক আঁকব বলে।


আমি আর কখনও মুছব না বিশ্বাস করো
আমার মনে আছে তুমি বলতে রাগত স্বরে
এটা মুছবেনা নইলে নজর লাগবে তোমার ঐ রূপে।


মা তোমার ঐ আদুরে হাতে
আর একবার দুধ মাখা ভাত খাইয়ে দাও না।


তোমার পরী আর বায়না ধরবে না খাবার নিয়ে
এই দেখ তোমার পরী কান ধরেছে।


মা আমি বুঝি..খুব কষ্ট হচ্ছে তোমার
তোমার কষ্ট হলে আমিও খুব কষ্ট পাই মা।


তুমি যখন ফুঁপিয়ে কাঁদ আমার জন্যে
আমি অধীর হয়ে তাকিয়ে থাকি তোমারই দিকে।


মাগো আমার যখন পড়বে মনে;
এলবামটা খুলে দেখ..


তোমার পরী মিষ্টি করে হাসছে টোল পরা গালে।
জন্মদিনের কেক কাঁটছে মাথায় লাল টুপি পরে।
সাথে ঝন্টু পল্টু আর সুমনা।


মা মনে আছে ঝন্টু আগে কেক খাবে বলে
মুখ হা করে বসে আছে ছবিতে।


মা তুমি না গল্প বলতে পরীরা ডানা মেলে আকাশে উড়ে বেড়ায়।
আজ তোমার পরী ডানা মেলে আকাশে বেড়ায় গো মা।


মা তুমি জানই না আমার সাথে কি হয়েছে
অথচ তুমি আমায় খুঁজে বেড়াও হন্যে হয়ে
কেঁদে কেঁদে বালিশ ভিজাও নোনা জলে।


ঐ যে আঙ্কেল গুলো মনে আছে তোমার?
ওরা..ওরাই তো তোমার পরীকে কেড়ে নিয়েছে চিরতরে।


ওরা চকলেট দিলে নিতে চাইনি বলে,
তুমি বলেছিলে ওরা তোমার আঙ্কেল হয়
কিচ্ছু হবে না চকলেট নিলে।


মা আঙ্কেলরা বুঝি এমনই হয়???????????


ওরা বুঝল না আমার পুতুল বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে
সুমনার রাজপুত্তর ছেলে গড়াইয়ের সাথে;


কথা হয়েছিল সুমনার সাথে স্কুল থেকে ফিরবার পথে
ও বলেছিল চল আমরা বাঁকি টিফিন গুলি রেখ দিই
পুতুল বিয়েতে খাওয়াব বলে।


আরও কত্তো
প্লান করেছিলাম বর যাত্রীদের নিয়ে।


ওদের পান মসলা খাওয়াব বলে
দিদুর পান সুপরী চুরি করে রেখেছিলাম স্কুলের ব্যাগে।


মা শুনবে তুমি আমার কথা.
আমি কখনই তোমার অবাধ্য হইনি গো মা!!


সুমনা যখন বাড়ি পৌছে গেল,
আমি একাই যাচ্ছিলাম ঘরের দিকে।


পেছন থেকে একজন ডেকে বলল পরী ও পরী চকলেট খাবে না?
আমি না বলতেই মুখ চেপে ঝাপটে ধরে নিয়ে গেল বাঁশ বাগানে


মাগো তুমি জান না কত্ত কেঁদে ছিলাম মা মা বলে;
একজন মুখ চেপে ধরল শক্ত করে, আর দুইজন দুই হাত।


আর একজন???
খুব খারাপ করেছিল মা


আমি খুব কেঁদেছিলাম..
কাঁদতে কাঁদতে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল


আমার ক্লান্ত অবসন্ন শরীর যখন নিঃসতেজ হয়ে গেল
ওরা আস্তে করে ঘুম পারিয়ে শুইয়ে দিল বাঁশ বাগানে।


মা তুমি আর একটু ঘুমাও জেগে যেও না কিন্তু..
নইলে তোমার পরী অভিমান করে উড়ে যাবে আকাশ পানে।



বর্তমান সমাজে প্রতিদিন ঘটে যাওয়া নির্মম ঘটনা গুলো কমবেশি সবারই চোখে পরে পত্রিকার পাতা উল্টাতেই। কখনো কখনো বেদনায় মন হয় ভারাক্রান্ত। হই ব্যথিত। এমনই একটি ধর্ষিতা শিশুর মায়ের কাছে না বলা গুলো কবির কল্প মনের দরজায় বার বার কড়া নাড়ে। আর সেই কল্পনা থেকেই এই কবিতাটির জন্ম। প্রিয় কবি পাঠকগন ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন প্লিজ।