কবিরাণী, তুমি জানোনি আমি প্রতিশ্রুত হয়েছিলাম এক অনুরাগ স্বপনে, নিজস্বতা হারিয়েছি তোমার কাব্যে ফুটে থাকা মশগুল শব্দের ঝংকারে। তোমার কবিতার শরীর ছুঁয়ে যায় অবিন্যস্ত জীবনের এক অবহেলিত যৌবোন!
তুমি জানোনি আমি তোমার নামে দরূদ পড়ে হয়েছি ফানাফিল্লাহ্। একমাত্র তোমার ভাবনার রাতে আমি আকাশ দেখি,
তারা দেখি ;শ্যামবর্ণ তারা, ধূসর তারা, সীমন্তিনী তারা, উদাসীনি তারা, জোনাকি তারা, আকাশি পাতার চোখের তারা!কতো রকম তারা আকাশে! অথচ আমি কাউকেই ছুঁতে পারিনা,আমি ঠায় দাঁড়িয়ে অবুঝ আঁখি মেলে দর্শন করি প্রেম তোমার আদিত্য জাহানের অন্ধ গূহপথ!বাঁকা চাঁদ আকাশ হাতে দাঁড়িয়েছে অবলীলায় তাঁর রূপ ছোঁবে বলে,পর্দাহীন জানালায় সাতরঙা আকাশী পাতার চোখ মাতিয়ে যায় মৌবন!ফের ছুটে চলা রাত প্রতিশ্রুত হয় অনুরাগ সনুরাগ স্বপনে। পূর্ণ হবার কতো ইচ্ছা নিয়ে অবিশ্বাসের দোলে দুলতে দুলতে তোমার বিশ্বাসের সীমানা ছোঁবো বলে বেঁধেছি বুক!
আমার নিজস্ব আকাশে কোনো তারা নেই, চাঁদ নেই। একমাত্র তোমারই অচেনা অবয়ব চিরচেনা হয়ে গেঁথে আছো আঁধারের রক্তজবা হয়ে। রঙহীন আমি তোমার শব্দে আবৃত হয়ে চিনেছি আশ্রয়, মায়াময় জলস্রোতে ভাসিয়েছি হৃদয়ের সমস্ত সুর।
তপ্ত খরায় চৌচির নিজস্ব অস্তিত্ব চেয়ে আছে অনাগত তোমার যমযম ধারায়!
তুমি জানোনি কোনোদিন জীবন খেলার ছলে আমিও প্রেম প্রেম খেলার পুতুল হয়েছিলাম। সে কখনো বুঝতে পারেনি ভালোবাসার সুখ কোথায়!  আমি কেবল একটা ম্যাথম্যাটিকস স্বপ্ন দেখেছি, যেখানে সবটাই যুখরুপ বালুর পাহাড়।
তবুও আমি তাঁকে হারিয়ে নিঃস্ব হইনি।
জীবনের সমস্ত পাঠ শেষ করার অপেক্ষায় আমি এখনো কবি!
"সকল প্রশংসা তাঁর" যে আমায় ধৈর্য দান করছে।যখন তোমার মনোপন্যাসের দৃশ্যান্তর দেখি  তখন আমার ঝরে পরার ভাবনায় পেন্সিল হাতে ছবি আঁকি এক করুণ আঁখির! অন্তিম পাঠ্যন্তরে  ভাবনাকে স্নান করাই তাঁর স্বরূপ একাত্মতায়।
ভালোবাসার কপালে এক চিমটি সিঁদুরে উজ্জ্বল হয় চাঁদ দেখা ঘরের নক্ষত্রে গাঁথা লাল সবুজ বিছানা।
গল্পের মেরুদণ্ডে যখন ইচ্ছে জাগে আমি মনকে থামিয়ে রাখি; ঝরে যাওয়া দিন একদিন ঠিক আশ্রয় খোঁজে পাবে প্রকৃতির কোনো এক ঋতুতে .!
আমার স্মৃতিময় গল্পে নিজেকে দিওনা ভাসায়ে। আমি বরং ভুলে যাই;তুমি নতুন গল্প শুরু করো নীল ডায়রীর সাদা কাগজে। কালো কালো বর্ণগুচ্ছ কখনো কখনো হাসাতো, ভাবতে থাকো শতাব্দীর পুরনো শব্দগুলো অামাকে ঘুমহীন করতো,
এখন তার অনেক পরিবর্তন! ঝুলন্ত পূর্ণিমায় কেটে যায় রাত, মনে হয় কোনোদিন শুনবো, তুমি বেঁচে অাছো, তুমি থাকবে তোমার অতীত বর্তমান, ইহকাল পরকাল সবই অামার কাছে সুন্দর ও প্রিয় হয়ে উঠবে!
অামি তো অামার কাছে নেই, স্বপ্নের শয্যায় ভেসে গেছে অনেক সময়, এখন বলতে পারিনা অামি কখনো কবি ছিলাম! তাই তোমাকে রাণী বানাতে বড্ড ভয়! যদি কখনো তুমিও হারিয়ে যাও চাঁদের বেলা ফুরাবে জেনে, যদি তুমি আঁধারের সঙ্গী না হও; তবে ঝলমল হবেনা, প্রভাত হবেনা কোনো রাতের!মৃত্যুর বিভীষিকায় ছেয়ে গেছে পৃথিবী, ঘোর অন্ধকার চারিদিক। হে বিশ্ব; বাঁচতে দাও! পুঁজির দাপটে দুনিয়া অন্ধকার,  তছনছ হয়ে গেছে সম্রাজ্যবাদের করাল গ্রাসে! গণকবর রচিত হচ্ছে গণতান্ত্রিক মাটিতে। এখন শুধু, ধনতন্ত্র, দখলতন্ত্র, লুটতন্ত্র, ধর্মতন্ত্র;ভূত হয়ে গেছে সব!হাজার হাজার স্বপ্ন চাপা পড়ে রয় শুকনো পাথরে, নিঃসীম অন্ধকারের নদী এখানে কেউ কারো নয়!এখানে আমি তোমার তুমি অামার হতে পারি কিন্তু অামরা তোমাদের তোমরা অামাদের হতে পারি না!
সাম্প্রদায়িক অার অসাম্প্রদায়িক শব্দের অাঙিনা যেনো রক্তিম রঙে রাঙানো, অামরা এখন খেলতে পারিনা হাতে হাত রেখে  বিজয়ের আশায়! তাই অামরা পরাজিতো হই মানবতার অাড়ালে।
যে অভাবের ভাবি তোমার স্পর্শে শুদ্ধ হতে চায় তোমার ভিতর মুচড়ে উঠা বৃষ্টিগর্ভ বায়ুর আবর্তে শ্বাস ফেলতে চায়, এবার তাকে গ্রহণ করো প্রকৃতি তোমার উন্মুক্ত শোভাময় ললাটে।
এক জনমের আড়ি বুকে বিক্ষিপ্ত পতংগের মতো পিপাসিত হয়ে আছি ত্রিঢঙের মাটিতে, তুমি জানো কবিরাণী! রাত নিগূঢ় হলে শিল্পী প্রাণে তাঁর সঞ্চার আঁকে নদীর মতো পথ; কেউ হেঁটে যায় এঁকে যায় প্রকৃতি পাতায় ছবি হয়ে, তোমার ভিতর আবৃত এই চারুশিল্পের জ্যোৎস্নায় আঁকা পৃথিবী। এবার এ আলোতে ঝলসে আমার অবশেষ রঙ!
কাব্যময় জীবনের সমস্ত অভিলাষ হাহাকারে ভাসে; তবুও তোমার হৃৎপিণ্ডে সাজানো স্বরলিপি ধারণ করে বাদক হই, তিন তারের ভায়োলিনে বুঁনন করি স্রোতের মতো সুর যেনো স্থলপদ্মের গা ছুঁয়ে ভেসে যায় সুমধুর গান!


অংশবিশেষ- কবিরাণী
যোশেফ হাবিব