বাবা বলতো
দেখিস একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে
একটার পর একটা
মায়ের গয়না
বাবার ফেল পরা ব‍্যবসায়
চলে গেল
লুকিয়ে মা চোখের জল
ফেলত তবুও
বাবার ওপর ছিল চরম ভরসা
ভাবতো নিশ্চয়
একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।


আমরা বলতাম শেফালী মাসী
মা দিদি বলত
আমাদের পাড়াতেই  থাকত।
শেফালী মাসীর ছেলে
কি একটা চাকরি নিয়ে
আরবে গেছিল।
সেখানে নাকি অনেক টাকা।
অভাবের সংসার
মাসীর একটু আপত্তি ছিল
তবুও মেনে নিয়েছিল
যাবার সময় মাসীর ছেলে বলেছিল
কটা তো মাত্র বছর।
দেখো তারপর
সব ঠিক হয়ে যাবে।


সুমনা আমার ক্লাসেই পড়তো।
ওরা বনেদী বড়লোক
ওদের পৈতৃক ব‍্যবসা
বাড়ীর মেঝে দুধসাদা পাথরের
ওর পড়ার ঘরের থেকেও ছোট আমাদের ভাড়ার ঘর
ওদের বাড়ি গেলে কেমন
হীনমন্যতায় ভুগতাম।
অথচ সুমনা কত সহজেই
দিনের পর দিন আমার বাড়ি আসত
মায়ের সামান্য তেলমশলায় রান্না খেত চেটেপুটে।
সবাই জানতো এমনকি মা ও
ভাবত সুমনা আমার জন্যই
অথচ কোনোদিন সাহস
করে বলতে পারিনি
যদি না বলে
মনে মনে ভেবেছিলাম
একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।


বাবা একদিন চলে গেল হঠাৎ
ছোট্ট ঘরেই মা সারাটা জীবন আটকে থাকল
শেফালী মাসী এখন লোকের বাড়ি রান্নার কাজ করে
বছরখানেক টাকা পাঠিয়েছিল ছেলে
আর কোনো খবর নেই।
বিয়ের কার্ডে  একটা
ছোট্ট চিরকুটে
সুমনা লিখেছিল 'কাপুরুষ।'


দিন যায় ঠিক হয়না কিছুই।
তবুও আমরা বাঁচি নিরন্তর
একটু আশায়
একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।