স্নেহের খোকা
দুদিন আগেই তোর
চিঠিটা পেলাম।
তোরা বাসা বদল করেছিস।
এবার নাকি তোদের ফ্ল‍্যাটটা
আরও ওপর তলায়;
জানিস ওপর থেকে পৃথিবীটাকে বড় সুন্দর মনে হয়
কিন্তু তার মধ্যে প্রান থাকেনা
কেমন যেন ছবির মত
রঙ আছে বর্ণ আছে
তবুও প্রানহীন।
পৃথিবীটাকে ওপর থেকে নয়
নীচে নেমে এসে দেখিস।
তোর মায়ের শরীর দিন দিন
খারাপ হচ্ছে
সারাদিন কেমন যেন
উদাস হয়ে থাকে।
তোর জন্মদিনে ফোন করেছিলাম
কিন্তু নম্বর টা বোধহয়
বদলে গেছে।
তোর মা পায়েস করেছিল।
নলেন গুড়ের।
তোর খুব প্রিয় ছিল।
তোর মা বলে
তুই নাকি অভিমান করেছিস
তোর ওখানে আমরা যাইনি বলে।
আসলে কী জানিস
এ দেশটার ওপর বড় মায়া পড়ে গেছে
একদিন সব হারিয়ে
ওপার বাংলার শেকড় উপড়ে
ঠাঁই নিয়েছিলাম এখানে
চোখ ফেটে জল আসত
আমার দেশ আমার জন্মভূমি
সব পর হয়ে গেল
একটা দেশ হলো দুটুকরো
স্বজনভূমি হলো বিদেশ
তবু মেনে নিয়েছিলাম
মুছে ফেলেছিলাম
শৈশবের স্মৃতি
হলাম উদ্বাস্তু।
তারপর কখন যেন
এদেশটা হয়ে গেল আপন।
একবার দেশ ছেড়েছিলাম
বাঁচার তাগিদে
আশ্রয়ের তাগিদে
সেই নিশ্চিত আশ্রয়টুকু
যার কাছে পেয়েছি
তাকে কেমন করে ছেড়ে যাই বল…...
নতুন করে আর
শিকড় উপড়াতে বলিসনা
বরং এই বেশ আছি
নিজের পরিচয়ে।