হাসপাতাল শয্যায় বেশ কিছু অচেনা মুখ
আজ দীর্ঘদিন ধরে শায়িত। তাদের চোখে
গাঢ় ঘুম, পৃথিবীর চাকচিক্য তারা দেখতে
পান না, সূর্যোদয়-সূর্যাস্তও টের পান না।    


তাদের চক্ষু নিমীলিত, নাকে পেটে নলের
অবাধ যাতায়াত। এতেও তারা উঃ শব্দটি
করেননা। সেবকদের সাবধানী হাতে যেন
দেহটা তাদের চির বন্দোবস্ত দেয়া আছে।


অসাড় দেহেও তারা নিথর নন। নিঃশ্বাসে
প্রশ্বাসে জানান দিয়ে যান তারা একেবারে
প্রাণহীন নন। প্রিয়জনের অধীর প্রতীক্ষার
প্রতি তারা যেন আপন খেয়ালে উদাসীন!


ডাক্তার আসে, ডাক্তার যায়। তাদের দেখে
মনে হয় তারা প্রত্যেকে যেন মৃত্যুদন্ডের
কোন আসামীর আপীল শুনানি শুনছেন।  
তাদের রায় প্রস্তুত, শুধু ঘোষণা দেয়া বাকী।


অসাড় দেহে তাদের মনও কি অবচেতন?
মন বলে কি তাদের কিছু অবশিষ্ট আছে?
তারা কি কোন মায়াবী মুখের কথা ভাবেন?
অনুভূতির তরঙ্গগুলো কি তারা টের পান?


জানিনা, তবে তাদের এই কোমাচ্ছন্ন অবয়ব
আমাকে উৎসুক করে, আমি খুঁজি তাদের
নিস্তরঙ্গ মনের ঠিকানা। তাদের স্মৃতি কি মৃত?
হায়! কোমা কি এক অদৃশ্য মাস্টারের ডাস্টার?


পাদটীকাঃ  পরিচিত কেউ একজন হাসপাতাল শয্যায় কোমায় শায়িত, এই খবর পেয়ে তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। সাথে অন্যান্য রোগীদেরকেও দেখলাম এবং তাদের সেবাকারী কিছু প্রিয়জনের সাথেও আলাপ হলো। কিছু বিচিত্র চিন্তা ভাবনা নিয়ে বাসায় ফিরলাম। তার কিছু অনুভূতি এই কবিতায় প্রতিফলিত।


ঢাকা
২৭ অক্টোবর ২০১৪
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।