করুণার কোন ইতিহাস অন্ততঃ করোনার নেই,  
সে যাকে পাচ্ছে, তাকেই ধরছে,
গোপনে গোপনে ঢুকে যাচ্ছে,
অসতর্ক মানুষের নাকে, মুখে, চোখে।
সপ্তাহ খানেক পরে জানান দিয়ে যাচ্ছে,
আমি এসেছিলাম, ধন্যবাদ নেমন্তনের জন্য!


কোথাও কোথাও জ্যামিতিক হারে বেড়ে চলেছে
করোনাক্রান্ত সন্ত্রস্ত, অসহায়, আর্ত পীড়িতদের  
ত্রস্ত হুইলচেয়ারের সারি, ছুটন্ত এ্যাম্বুলেন্সের নিনাদ!  
হাসপাতালের শয্যাগুলো নীরব সাক্ষী হয়ে থাকছে
একটি স্বাভাবিক নিঃশ্বাসের প্রত্যাশায়, অসহায়  
মুমূর্ষ মানুষদের জীবনযুদ্ধের, তাদের পরাভবের।


বাতাস ভারী হয়ে যাচ্ছে মানুষের কাতর আর্তনাদে।  
আস্তে আস্তে তারা চলে যাচ্ছে নিস্তব্ধে, শীতল প্রস্থানে!  
তাদের শয্যাগুলো ভরে যাচ্ছে নতুন রোগীর আগমনে।  
সাক্ষাৎ দেবদূত হয়ে তাদের পাশে গম্ভীর মুখে দাঁড়ানো  
ডাক্তার সেবক সেবিকারা অক্লান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছে-
ওদের ভারী শ্বাসকে কিছুটা হাল্কা করে দেয়ার জন্য।  


তাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকে রোগীর মুখ ও পাঁজরে।    
চেষ্টা করে যায়, যেন হাপরের মত ওঠানামা করা
তাদের পাঁজরগুলো শান্ত, স্থবির না হয়ে যায়।
শয্যাপাশের মনিটরে ওঠানামা করা চিত্রলেখাটি যেন
হঠাৎ কম্পনহীন সরলরেখায় পরিণত হয়ে না যায়!
কিন্তু তারা ঠেকাতে পারছে না ওদের অগস্ত্য যাত্রা!        

করোনার আগমনবার্তা পাবার পরেও, এখানে সেখানে
মুখরিত ছিল জনপদ, পানশালা আর ধোঁয়ার আসর।  
ঝলমলে ছিল বিপণী, পূর্ণ ছিল গণবাহনগুলোর আসন।
অতঃপর......
ধীরে ধীরে একে একে নিভে গেল সকল দেউটি,  
নিস্তব্ধ হয়ে এল ব্যস্ত জনপদ, পান ও পণ্যশালা, মহল্লা!  


আজ মানুষ গৃহবন্দী, কেউ স্বেচ্ছায়, কেউ বাধ্য হয়ে।
সবাই এক অজানা আশঙ্কায় শঙ্কিত, ত্রস্ত, চকিত।
করোনা ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে মানুষকে গৃহবন্দী করেছে।
সেই খুশীতে ডিগবাজি খাচ্ছে সাগরের সাঁতারু ডলফিন।
পথে পথে সারমেয়রা নিশ্চিন্তে সভা করছে, পাখি গাইছে,
কোথাও কোথাও বন্য প্রাণীও মহাসড়কে খেলা করছে!


ঢাকা
৩০ মার্চ ২০২০