বাঁচার অদম্য ইচ্ছায়, প্রাণ রক্ষার তাগিদে,
দীর্ঘ একটি বছর ঘরে স্বেচ্ছাবন্দী হয়ে রইলাম।
নেহায়েৎ প্রয়োজনে বের হতে হলে,
ইউনিফর্মের মত করে, নির্ভুলভাবে
মুখে মুখপট্টি বেঁধেই ঘর থেকে বের হয়েছি।
কি  জানি কখন ছিঁড়ে যায়, সেকথা ভেবে-
অতিরিক্ত একটা মুখপট্টি পকেটে রেখেছি।
কারণ একটাই, আরও কিছুদিন বাঁচতে চাই!


হায় জীবন! একদা এমন সময় ছিল, যখন-
কোন কিছুই তোয়াক্কা করিনি।
সিঁড়ি লাফিয়ে উঠেছি, অযথা দৌড়িয়েছি,
এখন সিঁড়ি নামার সময় রেলিঙের খোঁজ করি।  
মুখপট্টির কারণে নীচের দিকে তাকালে
চশমা চোখ থেকে পড়ে যেতে চায়,
কোনমতে সামলে নেই।
নিঃশ্বাসের কারণে চশমার কাঁচ ঘোলা হয়ে যায়,
মাঝপথে থেমে পরিস্কার করে আবার লাগাই।
কারণে অকারণে সন্দেহের দোলাচলে পড়ে,
হাত ধুই, মুখচোখ ধুই, খানিক পর পর।  
কারণ একটাই, আরও কিছুদিন বাঁচতে চাই!


একদা মাথায় কোকিল পালকের মত কালো কেশ ছিল,
আজ সেখানে রোদ-ঝলমলে রূপোলী ইলিশের শুভ্রতা।  
বয়স এক অদৃশ্য বিনাশক বিবেচিত হলেও,
আজ বয়সের কল্যাণেই যেন সৌভাগ্যের দুয়ার খুলে গেল!  
দু’মাসের ব্যবধানে দু’বাহুতে দুটো সুইফোঁড়ে
শরীরে সঞ্চারিত হয়ে গেল মহামারির দুষ্প্রাপ্য প্রতিষেধক।  
আর কোন যোগ্যতা নেই-
শুধুমাত্র বয়সের কারণেই পেয়ে ধন্য হলাম এ অগ্রাধিকার।


জীবনের পরমায়ু নির্ধারিত হয়ে আছে
জীবন মরণের প্রভুর আজ্ঞামত, সে কথা জানি।
সেকথা জেনেও সুইফোঁড়ে খুশি হই, সবাইকে জানাই,
কারণ একটাই, আরও কিছুদিন বাঁচতে চাই!


(করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর মনের অনুভূতি। ফেসবুকে একটা ছবিও দিয়েছি, কিন্তু এখানে তো আর সেটা দেয়া সম্ভব নয়!)


ঢাকা
১১ এপ্রিল ২০২১