‘লকডাউন’ এ আছি, বেশ ভালই আছি।
ডমেস্টিক রুটিনে অভ্যস্ত হয়ে গেছি।
প্রতিদিন একই কাজ করে যাচ্ছি,
তবু ক্লান্তি নেই, কারণ-
কাজগুলো আমি খুবই ভালবাসি।
প্রতিদিন একই মুখগুলো দেখে যাচ্ছি,
তবু ভাল লাগে, বড় ভাল লাগে, কারণ-
মায়াবী এসব মুখগুলো আমি বড় ভালবাসি।


প্রতিদিন একই প্রার্থনা করে যাচ্ছি,
ক্লান্তি নেই, তবু কোন ক্লান্তি নেই, কারণ-
প্রার্থনার সময় আমি ‘আনলকড’ হয়ে যাই।
প্রভুর দয়ার শিশিরছটা নীরবে ঝরে ঝরে
আমায় সিক্ত করে যায়।
‘না চাহিতে নিরন্তর ঝরঝর বয়’,
অলখে খুলে দেয়
মনের কুঠুরির নিত্য নতুন জানালা।


দূর আকাশের অনেক নক্ষত্র উঁকি দিয়ে যায়,
সে জানালা দিয়ে মনের গহীনে প্রবেশ করে।
দোয়া চাই, দোয়া চাই, দোয়া চাই-
প্রাণহীনদের এসব প্রাণের আর্তি
সকাতরে আমার মুখে প্রার্থনার ভাষা দিয়ে যায়।
নিরন্তর সে ফল্গুধারা বয়ে যায় আমার জিহ্বায়!
ওদের কথা ভেবে মনে হয়, আমরাও যেন আছি
এক লকডাউন থেকে অন্য লকডাউনের প্রতীক্ষায়!


বাইরের জগত বলতে এখন আমার রয়েছে শুধু
অলিন্দে দাঁড়িয়ে দেখা এক টুকরো আকাশ,
আর কিছু সবুজ গাছ গাছালির মায়াবী ছায়া।
আকাশে এখন আর আগের মত ভাসমান
মেঘের মাঝে অপসৃয়মান, উড়ন্ত প্লেনের সবিরাম
আনাগোনা দেখা যায় না।
ডানাভাঙ্গা পাখির মত ওরা আজ
বডডো অনাদরে নিষ্ক্রিয়, ভূপাতিত।  


ব্যালকনি’র দেয়ালে সাঁটা ফুলের টবে নীড় বাঁধা
সেই বুলবুলি দম্পতিও আজ নেই।
শাবকদের সযত্নে লালন করে ওরা উড়াল দিয়েছে
সেই সে কবে, সপরিবারে, অনন্ত আকাশে।
হয়তো নিকটের কোন নতুন তরুশাখা  
আজ ওদের নতুন ঠিকানা!
‘লকডাউন’ এ সবকিছুই থিতু থাকে না,
ঠিকানা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে নিরন্তর, সহসাই!


ঢাকা
১৩ মে ২০২০