এক শীতের সকালে একটি সূর্যমুখীর সাথে গল্প করছিলাম,
বলেছিলাম, তুমিতো সারাদিন সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকো,
এবার একটু বিশ্রামে যাও, তোমার হয়ে আমি তাকিয়ে থাকবো।
সে বলেছিল, আমার যে সাধনা, তাতো তোমার মাঝে নেই,
পারবে কি পলকহীন তাকিয়ে থাকতে? এর উত্তর আর দেয়া হয়নি।


এক গ্রীষ্ম-মধ্যাহ্নে একটি উদাস ঘুঘুর ডাক শুনে দৌড়ে গিয়েছিলাম,
বলেছিলাম, সেই কখন থেকে এমন বুকফাটা ডাক ডেকে যাচ্ছো,
কোথায় তোমার সঙ্গিনী, কেন এমন বিরহী ডাকে সে সাড়া দিচ্ছেনা?
সে বলেছিল, ব্যাধের শিকার হয়েছে সে আজ ভোরে, আসবেনা কভু ফিরে।
তার বিরহ সঙ্গীতে আমিও কন্ঠ মেলাতে চেয়েছিলাম, সে দেয়নি।


এক বিষন্ন বিকেলে একটি রঙ্গি্ন প্রজাপতির কাছে ছুটে গিয়েছিলাম,
বলেছিলাম, তোমার শরীর থেকে একটু লাল-হলদে রঙ ধার দাও।
সে বলেছিল, এটা পড়ন্ত বেলা, রঙ মেখে লাভ নেই, কাল সকালে নিও।
রাতের আঁধারে অপেক্ষায় ছিলাম, কখন ভোর হবে, আলো ফুটবে,
এমন নিবিড় প্রতীক্ষার পর, পরদিন ভোরে আর তার দেখা পাইনি।


এক বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায় একটি বাবুই পাখির কাছে মিনতি করেছিলাম,
বলেছিলাম, এই বৃষ্টির মাঝে থাকার জায়গা নেই, একটু আশ্রয় চাই।
সে বলেছিল, আজ রাতে আমাদের মিলন-ক্ষণ ঠিক হয়ে আছে,
কাল দিনে এসো, যতক্ষণ খুশী থেকো, ঠিক সন্ধ্যার আগে চলে যেও।
পরদিন আর সেখানে যাইনি, জোড়ার মাঝে বেজোড় হতে চাইনি।


আদিতমারী, লালমনিরহাট।
১৭ আগস্ট ২০১৩
স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।