বাড়ী থেকে বের হলেই ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের কাঁচা রাস্তা,
বামে ঘুরেই সোজা হাঁটা ধরতাম। শশ্মানঘাটের পারে,
ছায়াময় বটতলে, হয়তো কিছুটা জিরোতাম, কিছুক্ষণ
পাখীর আনাগোনা দেখে ফের হাঁটা ধরতাম। বাঁকাপথ
পেরিয়ে এসে কাচারীপাড়ায় থেমে এটা ওটা দেখতাম।


'পার হয়ে যায় গরু, পার হয় গাড়ী'-এমনই একটা খাল
ছিল, আর সেই খালের উপরে ছিল বাঁশের সাঁকো, যেটা
পেরুলেই বিদ্যালয়, ডাকঘর, ইউপি অফিস, রেলস্টেশন,
হাটবাজার, সবই পেতাম। সুবোধ বালকের ন্যায় সব
করণীয় কাজ সেরে প্রকৃতির কোল বেয়ে বাড়ী ফিরতাম।


সমান্তরাল আরেকটি পথ বেয়ে চলতাম, এখনো চলেছি।
কিন্তু এ পথে শুধু সম্মুখে যাওয়া যায়,  পেছনে নয়।
পিছু ফিরে দেখা যায়, তবে ফেরা যায় না। ঘড়ির কাঁটা
ঘুরিয়ে হয়তোবা সময় তারিখ বদলানো যায়, কিন্তু চলে
যাওয়া দিন আর ফিরানো যায়না। হায়! তবু চলা থামেনা।


এ পথেও সবই আছে। পথটাই একটা বিদ্যালয়, জীবনের
পাঠশালা থেকে কেউ শিক্ষা নেয়, কেউ নেয় না। পথের
বাঁকেবাঁকে করা যায় ভাব বিনিময়, বিভিন্ন স্টেশন থেকে
যাওয়া যায় দিগ্বিদিক, বাটে ঘাটে করা যায় হাটবাজার।
এরপর যোগ হয় নতুন মাত্রা, শুরু হয় স্থবির পথযাত্রা।


পাদটীকাঃ    আমাদের জীবনে চলার দু'ধরণের পথ আছে। একটা দিয়ে সামনে, পেছনে, ডানে, বামে, সব দিকেই যাওয়া যায়, পথের ধারের সব কিছুই দেখা যায়, ইচ্ছে হলেই পথচলা বন্ধ করা যায়, আবার ফিরেও আসা যায়।। অন্যটা দিয়ে শুধুই সামনে যাওয়া যায়, পেছনে ফেরা যায়না, তবে পেছনের পথটুকু দেখা যায়। চলতে চলতে এক সময় পথটা মিশে যায় অন্য এক পথের সাথে, যে পথ আমরা কেউ চিনিনা। সেই পথের মিলন স্থলে শেষ হয়ে যায় চলন্ত চলা, শুরু হয় 'স্থবির পদযাত্রা'। সেটাও এক ধরণের পথচলা।  


ঢাকা
০৫ এপ্রিল ২০১৪
কপিরাইট সংরক্ষিত।