"স্যার, আচ্ছা সে জানা"
কতজনকে সে বলেছে এ কথা, তা তারও অজানা।
কুসুম নামের যে কুসুমটি দেখেছিলাম, সত্যি অনন্যা!
মলিন মুখে কৃত্রিম হাসির রেখাটানা যেন এক ফুলকন্যা।


ফুলবাড়ী রিসোর্ট, নামটা যেন দেশী দেশী মনে হয়,
পাহাড় কন্যা অন্নপূর্ণার অতি কাছে, তবে দেশী নয়।
উঠেছিলাম এক বিষন্ন বিকেলে, নিরিবিলি নিভৃতে,
দম্পতি মোরা মাত্র দু'জোড়া একটু ঘুরে বেড়াতে।


ভিনবয়সী আরো পর্যটক ছিল, তবে ভীড় তেমনটা নয়,
ঘুরেছিলাম চারিপাশে, হাতে ছিলো বেশ কিছুটা সময়।
ছবি তুলেছিলাম এখানে ওখানে, জলাশয়ে পা ডুবিয়ে,
কিছুটা ক্লান্ত হয়ে ফিরে এসেছিলাম, চায়ের তৃষ্ণা নিয়ে।


পুরো রেস্তোঁরাটি খালি ছিল, কুসুমরা ছিল এক কোণে,
চায়ের কথা বলাতেই, দলেবলে খুশী হলো মনে মনে।
ফাঁকে ফাঁকে  কিছু আলাপও হলো, পিতা স্বর্গবাসী,
দুঃখিনী মায়ের সংসারে তার ছিলনা তো কোন হাসি।


বিধবা মায়ের গোটা সংসারে নেই কোন রোজগার,
নিজের আয়েই চালাচ্ছে নিজেকে, আর পুরো পরিবার।
পড়াশুনা তাই এগোয়নি বেশী, তবে দুঃখী নয় তা নিয়ে,
ভাইবোন গুলো পড়ছে তো বেশ, তার রোজগার দিয়ে।


মাত্র দু'দিন ছিলেম সেখানে, মাত্র কবারই বা দেখা,
কোন যে মায়ায় বাঁধলো আমায়, শুনায়ে তার কথা।
বলেছিল সে আসার আগের রাতে, ডিনারের শেষে,
"স্যার, আচ্ছা সে জানা", এটুকুই, একটু মলিন হেসে।


মাথাটি দুলিয়ে চোখ দুটো তুলে হালকা আকুতি মেখে,
মধুর চারটি শব্দ দিয়েই, গেল বিষাদের ছায়া রেখে।
হয়তো সেকথা বলেছে অযথা, নেহাত শেখানো বুলি,
কানে বাজে তবু, ভুলি নাতো কভু, কুসুমের কথাগুলি।


ঢাকা
২০ মার্চ ২০১৩।
ঘটনার স্থানঃ ফুলবাড়ী রিসোর্ট, নেপাল।
কালঃ ২৫-২৭ এপ্রিল, ২০১২।