আজ এক সাদামাটা জীবনের গল্প বলবো, নিরেট
সাদামাটা হয়েও যে জীবন প্রদীপের মত আলো
বিচ্ছুরিত করে গেছে তার ঘরের প্রতিটি কোণে।
যার হাতের পরশে সংসার ঝলমলে হয়ে উঠে।


ছোট্টবেলায় পুতুল খেলা তার খুব প্রিয় ছিল।
বৃষ্টি নামলেই তারা দু'বোন বাক্সপেটরা নিয়ে
নেমে যেত পুতুল খেলতে। পুতুলের বিয়ে দিত।
তারপর আবার বাক্সপেটরা গুছিয়ে রাখতো।


তখন থেকেই মনে হয় পুতুলের সংসার নিয়ে সে
চিন্তাভাবনা করতো। যখন নিজের সংসার হলো,
তার সংসারটিকেও সে সেভাবেই গুছিয়ে রাখতো।
ছোট্ট নীড়টাকে এটা ওটা দিয়ে সাজিয়ে রাখতো।


যখন তার ঘর আলো করে এল তার প্রথম সন্তান,
সদ্যপ্রসূত শিশুটিকে যখন তার প্রসারিত বাহুতে
নার্স শুইয়ে দিয়েছিল, দীর্ঘ প্রসব যন্ত্রণার কথা সে  
নিমেষেই ভুলে গিয়েছিল ওর মুখের দিকে তাকিয়ে।


এরপর শুরু হয় তার এক নতুন জীবন। সময়ের
পরিক্রমায় সে একে একে তিনটি ছেলের মা হয়।
মায়ের কঠিন জীবন-পরীক্ষায় সে একান্ত নিষ্ঠার
সাথে তিনটিকেই ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে।


যখন তার তৃতীয় সন্তান হবে, বড় দুটো তখন স্কুলে
যায়। একদিন সন্ধ্যায় তার প্রসব বেদনা শুরু হলো।
ব্যথা নিয়েই সে রানা বান্না করলো, বাচ্চাদের ব্যাগ
গোছালো, খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে তবে হাসপাতালে গেল।


তার প্রতিটি ছেলেই সাদা কাগজের উপর পেন্সিলের
প্রথম আঁচরটি তার হাত ধরেই দিয়েছিল। লিখতে
পড়তে আর অংক কষতে শিখেছিল। তারা সবাই  
আজ নিজ নিজ প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে দীপ্যমান।


ঢাকা
২৮ মে ২০১৪
কপিরাইট সংরক্ষিত।