শিরোনাম দেখে হয়তো বা মনে হবে,
এটা যেন বাংলাদেশেরই কোন লেন,
আসলে তা নয়, এর প্রকৃত পরিচয়
'জেলিকো'র মেয়র ভালো জানবেন।


মার্কিন দেশে আছে পাশাপাশি,
দুই স্টেট, কেন্টাকি আর টেনিসি।
ঘোড়দৌড় খ্যাত কেন্টাকি ডার্বি,
রক ও লোকসঙ্গীত খ্যাত টেনিসি।


কেন্টাকি ছেড়ে দক্ষিণে গেলে,
টেনিসির মুখে স্বাগত জানাবে
এ্যাপলেশিয়ান দুহিতা জেলিকো।
শ্রেষ্ঠ কয়লা-স্তর তার গর্ভে নিহিত।


সেই শহরেই হঠাৎ এলেন একদিন,
বাংলাদেশের এক ডাক্তার খ্যাতিহীন,
ব্রত নিয়ে সেবা আর সৎ জীবিকার,
শীঘ্রই তিনি মন জয় করলেন সবার।


টেনিসি'র পথে-প্রান্তরে তিনি ঘুরেছেন,
পীড়িত ও বুড়োবুড়ীর গল্প শুনেছেন,
একের পরে এক উচ্চ ডিগ্রী  নিয়েছেন,
নিরলস অধ্যবসায়ে নিমগ্ন থেকেছেন।


জেলিকো'র জনগণ খুবই অভিভুত হলো,
অনেকের ফুসফুসের রোগ নিরাময় হলো,
তাঁর নাম-ডাক চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লো,
কৃ্তজ্ঞ জেলিকোবাসী তাকে মর্যাদা দিলো।


জেলিকোর মেয়র একদিন তাঁকে শুধালেন,
তাঁর বাড়ী সংলগ্ন রাস্তাটির নাম রাখবেন,
তাঁরই নামের সাথে মিল রেখে 'কবীর লেন'।
বিনয়ের সাথে ডাক্তার সম্মতি জানালেন।


কর্মযজ্ঞে সদা ব্যস্ত এই ডাক্তারের ঠিকানা
পরিবর্তনের ইতিহাস অনেকেরই অজানা।
সৌভাগ্য হয়েছে আমার সেখানে যাওয়ার,
'১১৫, কবীর লেন' এ কিছুদিন থাকার।


অনেক জেলিকোবাসী আমাকে বলেছেন,
পেশার পাশপাশি তিনি চ্যারিটিও করেন।
অনেকের জন্য তিনি কর্ম-সংস্থান করেছেন,
নিদ্রাহীনদের চোখে তিনি নিদ্রা দিয়েছেন।


জেলিকো শহরের এই '১১৫, কবীর লেন',
অনন্য সাফল্য ও শ্রদ্ধার প্রতীক এহেন,
একজন প্রবাসী বাঙালী ডাক্তারের জন্য যেমন,
গোটা বাংলাদেশের জন্যও গর্বের বিষয় তেমন।


পাদটীকাঃ  বাংলাদেশী ডাক্তার ডঃ হুমায়ুন কবির ফুসুফুসের ও নিদ্রা জটিলতা বিষয়ক রোগের চিকিৎসক। আমেরিকার টেনিসি স্টেটের 'জেলিকো' শহরে তিনি বসবাস করেন। এই গুণী ডাক্তারের আমি একদা সহপাঠী ছিলাম। গত বৎসরে আমি যখন আমেরিকা বেড়াতে গিয়েছিলাম, তখন তার আমন্ত্রনে আমি সপ্তাহ দুয়েকের জন্য তার জেলিকোর বাসায়  আতিথ্য গ্রহণ করেছিলাম। তিনি একজন স্বনামধন্য কবি, গল্পকার ও ঔপন্যাসিকও বটেন। আমি তার লেখার একজন গুণমুগ্দ্ধ পাঠক। গত বছর বই মেলায় তার পাঁচটি বই প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে কবিতা ও উপন্যাস ছিল। যুগপৎভাবে কোলকাতার বইমেলাতেও তার বই প্রকাশিত হয়েছে। বহুমূখী প্রতিভাধারী এই কবি-ডাক্তারের জন্য অনেক শুভেচ্ছা রইলো। তার গর্বে আমিও গর্বিত।


নিউ ইয়র্ক সিটি,
০৫ জুন ২০১৩
স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।