মহামহিম শ্রী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়,
তোমাকে স্মরন করি পরম শ্রদ্ধায়।


তোমার কন্ঠে শুনে ভালবাসার গান,
বুনেছি প্রেমের জাল কত অবিরাম।
কিশোর বয়সে যখন প্রথম শুনেছি,
বায়বীয় নীড় আমি কতই  বুনেছি।


নীড় বাঁধা পাখীদের ভালবাসা দেখে,
রচেছিলো গীতিকার কত মায়া মেখে।
'যেমন করে নীড়ে একটি পাখী
সাথীরে কাছে তার নেয় যে ডাকি'।


তোমার কন্ঠে শুনে প্রথম এ গান,
পাখীর নীড়ের পাশে কত ঘুরতাম।
টুনটুনি চড়ুই আর শালিকের ঘরে,
বেড়িয়ে এসেছি আমি তাদের অগোচরে।


তা' এ বসা পাখীদের নিয়েছিনু পিছু,
কোনদিন দেখি নাই সেরকম কিছু।
একদিন দেখি এক লম্বা তাল গাছে,
বাবুই পাখীর কিছু বাসা ঝুলে আছে।


কোন এক বোশেখের গোধূলী লগনে,
পাখীরা ফিরছিলো সব আপন কূজনে,
আচমকা এল ঝড় করে তোলপাড়,
সব পাখী হয়ে গেল ভিজে একাকার।


ঝুলে থাকা ঘরে ছিল একটি বাবুই,
দিচ্ছিলো ডিমে তা' বুঁজে চোখ দুই।
ঝড়ের শব্দ তার যেই কানে গেলো,
অমনি সাথীর খোঁজে বেড়িয়ে এলো।


সেদিন দেখেছি আমি বাবুই কি করে,
ডেকেছিলো সাথীকে তার পরম আদরে।
ঘরে ঢুকে দু'জনেই গেয়েছিল গান,
সেই স্মৃতি মনে মোর আজও অম্লান।


তোমার এ গান আজও মন দিয়ে শুনি,
আরও সব গানে আছে প্রেম-জ্বয়ধ্বনি।
প্রকৃ্তির প্রেম, আর প্রেমের প্রকৃ্তি,
এইসব নিয়ে ছিল তব প্রেম-গীতি।


গাঁয়ের বধূর কথা শোনায়েছো তুমি,
শোনায়েছো রানারের অমর কাহিনী।
নীল ধ্রুবতারা যেসব প্রশ্ন করেছে,
শপথের মালা খুলে যে তোমায় ভুলেছে।


সবার কথাই তুমি গেয়েছো অক্লেশে,
পথের ক্লান্তি ভুলে বুঝি অবশেষে।
ঝড়ের কাছে রেখে গিয়ে তোমার ঠিকানা,
কালো মেয়ের রূপের তুমি করেছো বর্ণনা।


কন্ঠের কাজে নেই তুলনা তোমার,
সলীল চৌধুরীর ন্যায় ছিল সুরকার।
দুয়ে মিলে পেয়েছিলে অনন্য গীতিকার,
নামটি তার শ্রী গৌ্রী প্রসন্ন মজুমদার।


এই তিন কীর্তিমান পুরুষের কাছে,
বাংলার গান আজও ঋণী হয়ে আছে।
সকলের তরে রেখে ভক্তি সালাম,
বিনম্র শ্রদ্ধায় আজ বিদায় নিলাম।


ঢাকা
১০ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
কপিরাইট সংরক্ষিত।