আমার ঘরে একটা ময়না থাকে,
দেখতে নেই তার কোন জুড়ি,
কেমন করে যেন দেখতে দেখতে,
হয়ে গেল সে সুন্দরী এক বুড়ী।


এমন একটা সময় ছিল, যখন,
একাই সে সাজিয়ে রাখতো বাড়ী,
এটা সেটা লাগতো যখন যেমন,
ছুটতো সেটাই কিনতে তাড়াতাড়ি।


তার ছিল মাত্র তিনটে রত্ন ছানা,
আর একটা অবুঝ, ভাবুক স্বামী।
চারজনেই মানতো না তার মানা,
মানতোনা তার কোন সতর্কবাণী।


এদেরকে নিয়েই ছিল তার সংসার,
এদের রাখতে ট্র্যাকে, সামাল দিতে,
কখোনো সখোনো দিতো সে হুংকার।
কখনো ঝরাতো অশ্রুবারি, নিভৃতে।


ত্রস্ত-ব্যস্ত হয়ে একান্ত নিষ্ঠার সাথে,
জানপ্রাণ দিয়ে পালন করেছে দায়িত্ব,
সেবা দিয়ে গেছে সব অসুখে বিসুখে,
করেছে তাদের জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত।


জীবনে তারা সাফল্য পেয়েছে অঢেল,
তার সবই তারা উৎসর্গ করেছে তাকে,
ক্রেস্ট, রিবন, সনদপত্র আর মেডেল,
সব স্মারকই জমা করেছে তার হাতে।


এখন সবাই নিজ কাজে থাকে ব্যস্ত,
যেন কথাটি বলার সময় কারো নেই।
হাঁপিয়ে উঠে ময়না বসে ফেসবুকে,
ছবি আঁটে, ছবি ঘাটে, সময় পেলেই।


সবাইকে সে দেখতে চেয়েছে উদ্দীপ্ত,
মেনে নিয়েছে অনেক কিছুই  নীরবে,
জ়ীবন যুদ্ধে সে ক্লান্ত হলেও পরিতৃপ্ত,
তাই কখনো গান গেয়ে ওঠে সরবে।


ঢাকা
২৭ নভেম্বর ২০১৩
কপিরাইট সংরক্ষিত।