পরশুদিন থেকে মনের মাঝে এক অজানা আশঙ্কা
গোপনে নীড় বেঁধে চলেছে। ইফতারের পর আমি
মাকে টেলিফোন করেছিলাম। তিনি বল্লেন, তাঁর
শরীর বেশী ভালো নেই। মনও ভালো নেই। তাঁকে
বেশ সন্ত্রস্ত মনে হলো। তিনি নিজেই বললেন, তাঁর
সময় হয়তো ঘনিয়ে আসছে! সবই তিনি খুব দ্রুত  
ভুলে যাচ্ছেন, কিছুতেই মনে রাখতে পারেন না।
নামাজে ক্রমাগতভাবে ভুল করে যাচ্ছেন, আয়াত
ভুলে যাচ্ছেন, ভুলে যাচ্ছেন খুঁটিনাটি ও আবশ্যিক
নিয়মাবলী। শরীরটাও ধীরে ধীরে হাল ছেড়ে দিচ্ছে!


টেলিফোন রাখার আগে মা আমাকে দোয়া করতে
অনুরোধ করলেন। আমি শঙ্কিত হ'লাম। মনে পড়ে
গেলো, আমি ছোটবেলায় ভয় পেলে মায়ের শাড়ীর
আঁচলে মুখ লুকাতাম। মনে হতো, তাঁর শাড়ী দিয়ে
মুখ ঢেকে রাখলে পৃ্থিবীর আর কেউ আমাকে খুঁজে
পাবেনা। মায়ের শাড়ীটাই ছিল বিপদের তির থেকে
বাঁচার শ্রেষ্ঠ বর্ম। আজ মা আমার নিজেই শঙ্কিত।
আমি তাকে কি দিয়ে সাহস দেই? একমাত্র সাহস যা
আমাকে আর মাকে, উভয়কে এই শঙ্কা থেকে বাঁচাতে
পারে, সেটাই প্রতিটি রুকু আর সিজদাতে জপে চলেছি,
অর্থাৎ, 'রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সাগীরা!'


পাদটীকাঃ  শেষ লাইনে উদ্ধৃতাংশটুকু পবিত্র ক্বুর'আন শরীফে বর্ণিত একটি দোয়া। পিতামাতার কল্যাণ কামনায় সন্তানদেরকে এই দোয়াটি করার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন সুরা বনি ইসরাঈলের ২৪ নং আয়াতে। এর অর্থঃ ‘‘হে আমার রব! তাঁদের প্রতি দয়া কর যেভাবে শৈশবে তাঁরা আমাদের প্রতিপালন করেছিলেন।’’(সূরা বনি ইসরাঈল ১৭ / ২৪)