আগুন জ্বালানোর মন্ত্র তোমাদের জানা আছে,
নেভানোর নেই।
ভেঙ্গে চুরমার করার ক্ষমতা ঠিক জানা আছে,
গড়বার নেই।
ধ্বংসের শেষে তোমাদের নিশ্চিত গন্তব্য আছে,
আমাদের নেই।


আগুনের লেলিহান শিখায় তোমরা খই ভাজো,
আমরা পুরে মরি।
ভাড়া করা এ্যম্বুলেন্সে তোমাদের যাওয়া আসা,
আমাদের পদব্রজে।
লাশের অংকে তোমাদের সাফল্যের পরিমাপ,
আমাদের পাপের।


জনতার কাঁধ তোমাদের পদভারে নিষ্পেষিত,
তোমরা নির্লিপ্ত।
তবুও জনতা তোমাদের ডাকে অকাতরে আসে,
আশায় আশায়।
তোমাদের সুচতুর বাগ্মিতা তাদের উস্কে দেয়,
হাসায়, কাঁদায়।


একদিন তারা ঠিক বুঝে নেবে তাদের হিসাব,
কড়ায় গন্ডায়।
ক্ষমতার মসনদের নীচে চাপা পড়া লাশগুলো
জেগে উঠবেই।
কত হরতালে তোমাদের কতজন গেছে তার
হিসেব নিবেই।


পাদটীকাঃ  হরতাল জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার। কবিতাটি লিখেছিলাম এমন এক সময়ে যখন উপর্যুপরি ডাকা হরতালে এ দেশের জনজীবন অতীষ্ঠ হয়ে উঠছিলো, কিন্তু যে উদ্দেশ্যে হরতালের ডাক দেয়া হচ্ছিল, সে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছিল না, কারণ জনগণ হরতাল আহ্বানকারীদের উপর আস্থা রাখতে পারছিল না। আবার জনগণ সরকারের কিছু লাগামহীন দূর্নীতি, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা আর আইন আদালতের দলীয়করনের বিরুদ্ধেও ক্ষুব্ধ ছিল। এই দোটানায় থাকা জনগণের উপর নিষ্ফল হরতালগুলো যেন 'উষ্টপৃষ্ঠের শেষ খড়কুটোটি' (The last straw on a camel's back) হয়ে উঠছিলো। এমনই এক পরিস্থিতিতে একটানা দীর্ঘ ৬০ ঘন্টা হরতালের পর এক প্রত্যুষে, নিছক একজন অরাজনৈতিক সাধারণ নাগরিক হিসেবে মনের অনুভূতি প্রকাশ করে এ কবিতাটি লিখেছিলাম।


ঢাকা
৩০ অক্টোবর ২০১৩
কপিরাইট সংরক্ষিত।