শৈশবে বাবার বাড়ী,
যৌবনে স্বামীর,
দুই বয়সে দুই ঠিকানা,
বাঙ্গালী নারীর।


বার্ধক্যে ছেলের বাড়ী,
নইলে মেয়ের,
নিজ বাড়ী থাকলেও,
তা হয়না নিজের।


নিজের মাকে দেখে দেখে,
সবকিছু সে নেয় যে শিখে,
পিতা-মাতা, ভাই-বোনে,
খেয়াল রাখে সবার সনে।


বড় হয়ে যায় সে ছেড়ে,
মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে,
বাবার বাড়ীর স্মৃতিটুকু,
সাথে নেয় সে সঙ্গে করে।


স্বামীর ঘরে তিলে তিলে,
নিজ সংসার গড়ে তোলে।
জীবন বেঁধে ঘড়ির কাঁটায়
ঊর্দ্ধশ্বাসে ছুটে বেড়ায়।


দুঃখ সুখের দোলাচলে
নিজের কথা গিয়ে ভুলে
খেয়াল রাখে স্বামী-সন্তানে
আয়া বুয়া সকল জনে।


নারীর অতি সযত্ন দৃষ্টি,
নতুন সাফল্য করে সষ্টি।
তবু তার কথা হয়না কারো,
স্মরণ করা একটিবারও।


ব্যস্ততা তার ধীরে ধীরে,
কমতে থাকে একটু করে।
বাড়ীর সবাই নিজের ঘরে,
ব্যস্ত থাকে নিজের তরে।


সফলতার শীর্ষে উঠে,
সবাই থাকে কাজে মেতে,
রয়না সময় কারো  হাতে,
বলতে কথা তাহার সাথে।


এমনি ভাবে হঠাৎ করে
বন্দী সে হয় আপন ঘরে।
সময় কাটে নির্জনতায়,
জায়নামাযে, উপাসনায়।


বন্ধু আমার কথায় কথায়
ফেইসবুকে জানতে চায়,
নারী, তোমার ঠিকানা কী?
কোথায় তোমার ঘর বসতি?


আমি তাকে বলতে পারি,
নারীর আসল ঘর বাড়ী
স্বামী সন্তানের মনের কোণে,
কৃতজ্ঞতার উচ্চাসনে।


পাদটীকাঃ  আমার এক বন্ধু "নারীর বাড়ী কই" নামে ফেইসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিল। তার প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে এই কবিতাটি বেরিয়ে এলো।


ঢাকা
০৩ মার্চ ২০১৩
কপিরাইট সংরক্ষিত।