খালের পাড় দিয়ে পায়ে চলা পথ,
ধুপ ধাপ করে কত লোক হেঁঁটে যায়।
স্কুল ছুটির পর মেয়েটিও যাচ্ছিলো।
কাঁধে ব্যাগ, পরনে স্কুলের পোষাক।
পেটে ক্ষুধা, বাড়ীতে মায়ের অধীর
অপেক্ষা, তার সাথে বসে খাবে বলে।


বেলা তখন দেড়টা, মধ্যগগনে সূর্য।
ভোরের শিশিরস্নাত শিউলিগুলো
ততক্ষণে নিস্তেজ হয়ে চুপসে গেছে।
পরিত্যাক্ত হবার লজ্জায় ওরা চোখ
বুঁজে শুয়ে ছিলো, চোখের আড়ালে।
মাটির সাথে মিশে যাবার অপেক্ষায়।


ঐ পথ দিয়ে এত লোক এলো গেলো,
মধ্যবেলার শ্রীহীন ফুলগুলোর দিকে
কেউ একবারও দৃষ্টিপাত করলোনা।
শুধু ঐ কিশোরীটি হাঁটু গেড়ে বসলো,
আর পরম মমতা নিয়ে দু'হাত ভরে
ফুলগুলো মাটি থেকে কুড়িয়ে নিলো।


আমিও সে পথেই হেঁটে আসছিলাম।
চলার পথে এক ঝলকে চোখে পড়লো
শিউলিফুলে ভরা দুটো অঞ্জলি, মায়ার
স্পর্শে তারা যেন মেয়েটির মুখপানে
কৃতজ্ঞ দষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো। মমতা
আর ভালোবাসায় সিক্ত হলো ফুলগুলো।


ঐ দৃশ্যটা আমার মনে গেঁথে রইলো,
বাকী পথটুকু চোখে শিউলি নিয়েই
বাড়ী ফিরলাম। মেয়েটির মুখটুকু তো
দেখা হলোনা। মাথা গুঁজে বসেছিলো।
যার হাত ঝরাফুলকে এত ভালোবাসে,
তার মুখও নিশ্চয়ই ফুলেরই মত হবে।


ঢাকা
১৫ অক্টোবর ২০১৪
কপিরাইট সংরক্ষিত।