শৈশবে ফেরিওয়ালারা আমার খুব প্রিয় ছিল।
তাদের বৈচিত্রপূর্ণ ডাক শোনার জন্য আমি
কান খাড়া রাখতাম। আজো কানে ভেসে আসে,
সেই কৃশকায় দইওয়ালার চিকন সুরের ডাক।
শুধু এক শব্দের একটা লম্বা টানের ডাক, দ..ই!
তার আসার সময় ছিল বেলা এগারোটা নাগাদ,
যখন আপিস কিংবা স্কুলে পাঠাবার তাড়া থেকে
মা মুক্ত থাকতেন। আমি তখনো স্কুলগামী হইনি।
মা মাঝে মাঝে কিনে দিতেন, কখনো দিতেন না।
আমি দইওয়ালার দুলকিতালে চলে যাওয়া দেখতাম।


আরেকটি ফেরিওয়ালার ডাক আমার কানে ভাসে।
আট বছরের বালকের রাত দশটার পর জেগে থাকার
অনুমতি ছিলোনা। তখনকার বালকেরা এখনকার মত
এত নিশাচর ছিলনা। শীতের রাতে দশটার দিকে আমি
লেপের উষ্ণতায় শুয়ে কান পেতে থাকতাম, একটি ডাক
শোনার প্রতীক্ষায়, হ-ট-পে-টি-স! দূর থেকে ভেসে এসে
সে ডাক  ধীরে ধীরে কাছে চলে আসতো। বাবা বলতেন,
গরুর নাড়ীভুড়ী দিয়ে ওসব বানানো, খেতে নেই। আমি
সে ডাক শুনতে শুনতেই ঘুমিয়ে যেতাম। চাক্ষুুস অদেখা
সেই ফেরিওয়ালার কন্ঠস্বর আজও আমার স্মৃৃতিতে জীবন্ত!


ঢাকা
২৩ অক্টোবর ২০১৪
কপিরাইট সংরক্ষিত।