লাশের জায়গায় লাশ থাক, স্কোয়ারের হিমঘরে।  
চলতে থাকুক করতালি, এই উৎসবের আসরে!
বলা হলো, 'অনুষ্ঠান চলবে, যেমন চলে জীবন',
হোক না স্টেজের উপরই, একটা জীবনের পতন!  
নিজের চোখেই দেখে এলাম, চলেছেও ঠিক তাই,
সারারাত ছিল খানাপিনা, করতালি আর উল্লাস,
ছিলনা তেমন শোক কিংবা সমবেদনার বালাই।


'আমি একটা কথা বলতে....' ... শেষ কথাগুলো
তার অব্যক্তই রয়ে গেলো। অজুত দর্শকেরা সবাই
দেখলো অবাক হয়ে তার সবাক বিদায়। কিভাবে
কথা বলতে বলতেই তিনি মঞ্চ থেকে ঢুকে গেলেন
সোজা মরচুয়ারীর ড্রয়ারে, শেষ কথাটা জিহবার
ডগায় রেখেই চিরতরে। তার প্রস্থানের পর সব
কিছুই ঠিক ঠাক মত চললো, 'জীবন যেমন চলে'!


তার শরীরের রক্ত শীতল হলো, আর উষ্ণ হলো
সঙ্গীতবোদ্ধা দর্শদের করতল, মুহুর্মুহ করতালিতে।
যন্ত্রী,শিল্পী আর বাদকের দল তৃপ্ত হলো অভিবাদনে।
যদিও ফাঁকে ফাঁকে তাঁর কথা বলা হচ্ছিল, উৎসব
ছেড়ে কেউ যায়নি তাঁর বাড়ীতে সমব্যথী মন নিয়ে।
কথার ফুলঝুরি ঝরেছে, নীরবতা পালন করা হয়েছে।
জীবন চলেছে, তাঁকে স্মৃতির পাতায় উৎসর্গ করে।


পাদটীকাঃ  সত্যিই তো! কারো জন্যই তো কোনকিছুই থেমে থাকেনা, কোন স্থবিরতাই তো জীবনের চলমান গতিকে বন্ধ করতে পারেনা। হিমশীতল মরদেহ করতালির উষ্ণতা আর তৃপ্ত হৃদয়ের উল্লাসকে শীতল করতে পারেনা। সভ্যতার শিখর যত উঁচু হয়, বিবেক ততটাই যেন বায়বীয় হয়ে যায়।


বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজিত 'সঙ্গীত উৎসব' মঞ্চে শিল্পী কাইউম চৌধুরীর আকস্মিক মৃত্যুর ঘন্টা দুয়েক পরে আমি অনুষ্ঠানে গিয়ে একটুও টের পাইনি যে সেখানেই, সেই মঞ্চেই, কিছুক্ষণ আগে এই বরেণ্য শিল্পী বক্তব্য রাখা অবস্থায় এই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিয়ে গেছেন।


ঢাকা
০২ ডিসেম্বর ২০১৪
কপিরাইট সংরক্ষিত।