চলে যায়, উড়ে যায়..
শাবকেরা বড় হলে উড়ে যায়,
তাদের শাবকেরাও উড়ে যায়,
পক্ষীমাতার বুক খালি করে উড়ে যায়...
নীড় খালি পড়ে থাকে, পক্ষীমাতার চোখে ভাসে
দু'ফোঁটা নীর, আর বুকে বাজে শুন্যতার হাহাকার!


যে বুকের উষ্ণতা দিয়ে সে তাদের ঢেকে রাখে,
পরম আদরে ঠোঁটে তাদের আধার ধরে রাখে,
সেই বুক খালি হয়ে আসে, একদিন নিমেষে,
যখন তারা চলে যায়, উড়ে যায়...
তাদের আধার পড়ে রয় নীড়ে, জানান দিতে,
আজ পক্ষীমাতার কাজ যেন শেষ হয়ে গেছে...


নাড়ীর এ বাঁধন যতই শক্ত হোক,
একদিন দু'দিন করে সেটা ঢিলে হয়ে যায়,
ঢিলে করে দিতে হয়, অবশেষে ছেড়ে দিতে হয়...
অনন্ত আকাশ যারে হাতছানি দিয়ে ডাকে,
সাধ্য নেই স্নেহের মায়াজাল তারে সদা বেঁধে রাখে।
তাই তারে হাসিমুখে যেতে দিতে হয়, সে চলে যায়...


পাদটীকাঃ  আজ সকালে ফেইসবুকে "Good bye Arzee" শিরোনামে কিছু ছবি দেখে এই কথাগুলো মনে এলো। ছবিতে একজন স্নেহময়ী রমণী তার মেয়ে, জামাই আর নাতিকে বিমানবন্দরে বিদায় জানানোর সময় কিছু ছবি তুলে "Good bye Arzee" শিরোনামে পোস্ট দেন। Arzee হচ্ছে তার নাতি Arzalaan এর আদুরে নাম। খুবই সাধারণ একটা পারিবারিক ছবি। সবার মুখে একটা স্মিত হাসি আঁকা থাকলেও বিদায়ের বেদনার একটা ছাপ সবার চেহারাতেই মূর্ত ছিলো, এমন কি সেই ছোট্ট শিশু Arzee'র চোখে মুখেও।


ভালোবাসা নিম্নমুখী। নিজ সন্তানদের প্রতি স্নেহ ভালোবাসা যতটা গাঢ় হয়, তাদের সন্তানদের প্রতি তা হয় আরও ঢের বেশী। এজন্যই ছবির শিরোনামে মেয়ে ফারাশার নামটা না এসে নাতি Arzee'র নামটাই হয়তো অবচেতনে চলে এসেছে। তাদেরকে বিদায় জানিয়ে তিনি শুন্য বুকে ঘরে ফিরে আসবেন, গভীর বেদনা অনুভব করবেন, আবার প্রকৃতির নিয়মেই কিছুদিন পর স্বাভাবিক হয়ে উঠবেন। এরকম একটা উপলব্ধির কথাই বলতে চেয়েছি কবিতায়। একাকীত্বের অবসরে এ ধরণের ছোট ছোট বিচ্ছেদগুলোও মানুষকে ভীষণভাবে কাঁদাতে পারে।


ঢাকা
৩০ এপ্রিল ২০১৫
স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।