বাবা, কথা দাও,
তোমার মেয়ের লাশ যদি কখনও জঙ্গলে,রাস্তার ধারে, কোন বদ্ধ কূপে বা ফ্যানে ঝোলানো রশির সাথে চোখ দ্বারস্থ হয়-
তবে তোমরা কাঁদবেনাতো সেদিন ?


আমার এ দেহ খন্ড বিবস্ত্র নগ্ন মলিন,
বুকচিবুকে হায়েনার আঁচড়কাটা,
রক্তঝরা নীলাম্বরী অবস্থায় যদি পরে থাকার  খবর মিলে-
সেদিনো তোমরা আহাজারি করবে নাতো! কথা দাও।


কথা দাও বাবা, তোমার মেয়েরা শোষণে জর্জরিত হোক,
গায়ে গরম খন্তির ছ্যাকা পড়ুক,
এক মুষ্ঠি চুল বিসর্জন যাক স্বামী সংসার করতে গিয়ে ,
পেট, পিঠ নিষিদ্ধ সব স্থানে শত শত নির্যাতনের কালো কালো নির্বাক কষাঘাত ঝল-মল করুক।
শাশুড়ির তীব্র কথার চোটে -
অনবর প্রতি প্রহর বালিশ ভিজুক।
ক্রান্তিকালের অপর্যাপ্ত সুখ কাহনে জীবন অপদস্থ হোক।
তবু তোমরা প্রতিবাদী হবেনাতো ?
পুলিশের স্মরণাপন্ন হবে নাতো মান সম্মানের কথা ভেবে?
ক্ষর্ব মানবতা সেদিন জাগ্রত হবে নাতো, মিথ্যে অধিকার আদায়ে ?


রাস্তায় চলতে গিয়ে সাধু পুরুষ সাঝা -
ভদ্রো মুখোশের আড়ালে লুকেয়ে থাকা শয়তান দলের- শীশ,উহু ,আহা আফসোছ,
ওষ্ঠ কামড়ে কামনার বর্ষণের তাপে -
তাদের সামনে রোজ যাত্রা রঙ্গ পালার মত চিত্রায়িত হওয়া ।
চোখের তাকানিতে রোজ লুলুপ ধর্ষণ হওয়ার পরেও তোমরা হাত গুটিয়েই বসে থাকবে,কোন ঝামেলা না পাকানোর কথা ভেবে ,
কথা দাও বাবা, কথা দাও।


বাস , লঞ্চ, ট্রেন সবখানেই- শালীনতা রিলিপের ত্রাণের মত বিলীন হোক।
নিষিদ্ধ পল্লির মত লোকচোখের আড়ালে নোট দেখিয়ে সম্ভ্রম হানীর ঈশারা করুক।
জোস্, বডি ফিগার উতলা জোয়ার বলে নবজাতকের মতন লোল পডুক আমাদের দেখে ,
তবুও নিশ্চুপ, স্তব্ধতার মুর্তীর মত স্ট্যাচু হয়ে থাকবা।
বৃথা রাগ উঠিয়ে হৃদ যন্ত্রণা বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।
কোন বিচার শালিসের দরকার নেই,লোক মুখে কুৎসা রটবে বলে।
বাবা কি বলছি শুনছো..? এক্কেবারেই চুপ থাকবা কেমন !


এসিডে দগ্ধ কিংবা প্রতারণার চক্রে নিজেকে যদি বিলাতে হয়,
যদি কলিক কিংবা বস্ এর সুযোগ সন্ধানী ফাঁদে পরে তোমার মেয়ে এক রাত ঘরে না ফিরে,
যদি কখনও কাজ থেকে ফিরত পথের ,ট্যাস্কি অথবা অটোর গন্তব্য তোমার বাড়ির দ্বার পর্যন্ত না আসে,
যদি বিরঙ্গনা বেশে তোমার সামনে দাঁড়িয়ে বলি-
বাবা তোমার মেয়ে আত্মাহুতি দেয় নি ,ইজ্জত হারিয়ে তবুও প্রাণ নিয়ে বেঁচে ফিরেছি,
সেদিন সর্বশান্ত থেকে নিথর পাথর হবে নাতো ?
আমাকে নিজের মেয়ে বলে অস্বীকার করবে নাতো?
কথা দাও বাবা, আমার মাথা ছুঁয়ে কথা দাও।


31-08-17
রাত 3;12
এ আমার  শেষ লেখা (অনুরাগ)