'পড়ো তুমি', এই কথাটি আনলো প্রথম জিব্রাইল,
জ্ঞানের আলো দাও ছড়িয়ে, দাও খুলে দাও রুদ্ধ খিল।
মূর্খের দল লাফায় জোরে ভাব দেখায় যে সক্রেটিস!
জ্ঞানীরা কয়, তাদের সাথে শূন্য কলসীর বেজায় মিল।


ধর্মকথার মর্মখানি বুঝতে চাইলে বান্দা,
পুলসেরাতের ভয় করো আজ, দাও ছেড়ে সব ধান্ধা।
অনন্তরূপ লুকিয়ে আছে সত্তর হাজার পর্দায়,
দেখতে সে রূপ, পঞ্চবেনায় হও তুমি মন আন্ধা।


আল্লা-আদম একসাথে রয়, ফারাক কোন নাই,
আকারবিহীন আল্লার আরশ বান্দারই দিলটাই।
ভেদ জেনে তার মর্মকথা; খোঁজো, ওরে মন,
নিরাকারে নিত্য দেখো সাকার রূপের সাঁই।


মোহাম্মদের নূরে পয়দা বিশ্ব-ভুবনখানি,
সৃষ্টিতে যার রয় রহমত, আল-কোরানে শুনি।
হাশরকালে আল-কাউসার তাঁর হাতে যে রবে,
আল্লা-রসুল একসাথে ক', মন তুই অজ্ঞানী।


খোদার নূরে নবী সৃষ্টি, সৃষ্টি আদমকুল,
আল্লাহ যেন বৃক্ষ সয়ং, মানুষ রঙিন ফুল।
আউয়ালে-আখেরে তিনি, হাজার রকম রূপে;
বাদশা-ফকির নাই ভেদাভেদ সবার একই মূল।


খোদার নূরে আদম সফি সৃষ্টি হলো জানি,
আবার আদম থেকে গড়েন হাওয়ার দেহখানি।
কৌশল তার বুঝা যে ভার, রঙ্গ-খেলোয়ার!
আদম-হাওয়ার ভুবন মাঝে শুধুই পেরেশানি।


দেখ রে ও মন চক্ষু মেলে অরূপ রূপের সারাৎসার,
এক থেকে দুই সৃষ্টি হতেই, সৃষ্টি হলো এ সংসার।
স্রষ্টা খেলেন নিপুণভাবে সৃষ্টিকে তার নিয়ে,
জন্ম থেকে মৃত্যুবধি রক্তে-ঘামে একাকার।


ও মন আমার, আল্লাহ পেতে নাও নবীকে চিনে,
দেখবি না তুই অরূপের রূপ দয়াল নবী বিনে।
আল্লা যে বীজ, বৃক্ষ-নবীর খোঁজ নিলি না তুই,
নাও এবার মন নূরে-খোদায় ভক্তিরসে কিনে।


যে নূরে হয় আদম পয়দা, সেই নূরেতে সৃষ্টি মোর,
ধরার রূপের মদ্যপানে কাটলো না যে ঘুমের ঘোর।
সঙ্গদোষে রঙ্গ করে লোভের বশে ভ্রষ্ট হই,
পরের মাথায় দোষ দিয়ে কই, নষ্ট করে ছ'জন চোর।


কী আছে তোর! সোনা-দানা, জায়গা-জমি, ঘর-বাড়ি?
দিনের শেষে যেতেই হবে আরাম-আয়েশ সব ছাড়ি'।
সাড়ে তিন হাত মাটি পাবে, তার বেশি নয় একটুও;
পাড়া-পড়শি রাখবে গুঁজে স্থানটা হবে সরকারি।