(ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু। যাঁর জন্ম ২৩ জানুয়ারি, ১৮৯৭। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি এক উজ্জ্বল ও মহান চরিত্র; যিনি এই সংগ্রামে নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।)
--------------------------------
আমি তোমারে দেখেছি, হে নেতাজী!
বঙ্গবন্ধু মুজিবের দৃপ্ত তর্জনীতে।
আমি দেখেছি তোমারে অমিত তেজের
ঝাকড়া চুলের বিদ্রোহী নজরুল-মানসে;
তাঁর চেতনবিদ্ধ বিদ্রোহী কবিতায়।
আমি দেখেছি তোমারে কৃষকের বুকে;
প্রাণখোলা হাসি দীপ্ত চোখের রেখায়।
পোড়খাওয়া শ্রমিকের বর্ণীল পেশিতে,
উর্ধ্বমুখী মুষ্ঠিবদ্ধ হাতের উচ্ছ্বলতায়;
চোখের তারায় জ্বলে জ্বালাময়ী তেজঃ,
স্বদেশ মুক্তির পথে আগুন জ্বালানো দীপশিখা।


আমি তোমারে দেখেছি, হে নেতাজী!
স্বদেশ প্রেমিক মানুষের চেতনায় উজ্জীবিত,
দেশাত্মবোধের ভালোবাসা- জাতীয়তাবাদে,
প্রাণ বিসর্জনে সম্মুখে এগিয়ে যায়
নিঃসংকোচে, নির্দ্বিধায়;
সে সকল মানুষের বিদগ্ধ বিশ্বাসে।


আমি তোমারে দেখেছি, হে নেতাজী!
ক্ষমতালোভী পা-চাটা সারমেয়,
নির্দয় অসভ্য অত্যাচারীদের কাছে
ভয়ঙ্কর! এবং আতঙ্ক সৃষ্টিকারী জননেতারূপে।
তাই, বুঝি আজ তারা,
তোমার নামটি শুনতে চায় না কর্ণকূহরে।  
তোমার সৌষ্ঠবমণ্ডিত ইতিহাসের বলিষ্ঠ কথা;
শত ছলনায়, শত কূটিল কৌশলে,
মনগড়া গালগল্পের প্রলেপ দিয়ে ঢেকে রাখে।
প্রদীপ্ত সূর্যের আলো কখনো কি ঢেকে রাখা যায়
তুচ্ছ আকাশ-মেঘের আস্তরণ দিয়ে?
সূর্য সমতুল দীপ্র তোমার আদর্শ,
আজো হাজার যুবক-প্রাণে ঝংকারিয়া ওঠে।
ঝংকারিত হয় সেইসব কথাগুলো-
'স্বাধীনতা পাওয়া যায় না করুণায়,
তা' শক্তিতে আদায় করতে হয়;
অথবা রক্তবিহীন স্বাধীনতা আদায় হয় না কভু।
চিরন্তন সেই বাণী,
প্রতি জনপদে ধর্মীয় কথার ন্যায় আজ উচ্চারিত।


আমি তোমারে দেখেছি, হে নেতাজী!
একাত্তরে বাংলাদেশে, মুক্তিযোদ্ধার বিশ্বাসে;
রণাঙ্গনে প্রাণ বিসর্জনে অকুতোভয়তার শপথে,
দেশপ্রেমিক বাঙালির চোখে-মুখে।


হে নেতাজী! যুগে যুগে আসো তুমি-
ধূমকেতুরূপে, বিচ্ছুরিত অগ্নিপুচ্ছে
জ্বালাতে মুক্তির দীপশিখা;
নিদারুণভাবে অত্যাচারিত সকল জনপদে।
কখনো ম্যাণ্ডেলা হয়ে সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকায়;
কখনোবা মুজিবুর সবুজ শ্যামল এ বাংলায়।


০৮/০১/২০২২
মিরপুর, ঢাকা।