আমি অপেক্ষা করছি, একটি পুনর্জন্মের আশা নিয়ে
মানুষের নবতর জীবনের আশ্চর্য আবিস্কারের জন্য।
স্বার্থান্বেষী বুর্জোয়াদের কবল থেকে প্রলেতারিয়েতের মুক্তির
দুর্দমনীয় প্রত্যয়ে আজো আমি অপেক্ষা করছি।


এখন আমার বড়ো উদ্বেগের সময় গোপনে বহিয়া চলে,
মরন ও পরকাল, শেষ বিচারের দিনকে ঘিরে।
তবুও, অপেক্ষা করছি- অরাজক এ মহাবিশ্বের নিরাপত্তার জন্য,
টলায়মান পৃথিবীর চিরস্থায়ী স্থিতির জন্য।


সীমান্তে সীমান্তে এখন দেশত্যাগীদের ভীড়,
হানাহানি, রক্তাক্ত জনপদ, আশ্চর্য মৃত্যুর মিছিল!
সবকিছু প্রশমিত হবে একটি অলৌকিক যুদ্ধের মাধ্যমে,
প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার আকাঙ্খায় আমি অপেক্ষা করছি।


আমি অপেক্ষা করছি এমন একটি ধর্মীয় পুনর্জাগরণের জন্য,
যেখানে ঈশ্বরের নামে রক্ত ঝরবে না কোনো
মসজিদে, মন্দিরে, গীর্জায়, প্যাগোডায়, সিনাগগে।
যেখানে ঈশ্বর শুধু মানুষের ভালোবাসায় জন্মিত হয়ে
মানুষের চেতনার ভেতরে সৃষ্টি করবে অনন্য প্রেমময় প্রাণ;
সে ঈশ্বরের জন্য অপেক্ষা করছি।


আমি অপেক্ষা করছি পৃথিবীর সে সকল উত্তরাধিকারীদের জন্য-
যারা পৃথিবীর বন, পৃথিবীর পাখি, পৃথিবীর প্রাণী,
পৃথিবীর নদী-পাহাড় ও সমুদ্রের জল
পরিকল্পিতভাবে অনুদিন রক্ষা করে যাবে।
আমি সে সকল মানুষের জন্য অপেক্ষা করছি।


সমুদয় জাতীয়তা ধ্বংস করার আশ্চর্য বিশ্বাস নিয়ে
মানুষেরা অন্য কাউকে হত্যা করবে না অস্ত্র দিয়ে, ঘৃণা দিয়ে।
একটি চূড়ান্ত নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনে সকলে একাত্ম ঘোষণা করবে;
এমন একটি সুন্দর প্রভাতের জন্য,
শাশ্বত জীবনের গোপন কথা আবিস্কারের জন্য আমি অপেক্ষা করছি


আমি অপেক্ষা করছি একটি আশ্চর্য অমরত্বের জন্য,
যেখানে আমার শৈশব, আমার তারুণ্য, আমার যৌবন,
অবিচ্ছিন্ন কবিতার মতো জড়াজড়ি করে আলিঙ্গন করে থাকবে।
শেষ পর্যন্ত, চিরতরে যখন আমি চলে যাবো পৃথিবীকে ছেড়ে
সেদিন পর্যন্ত এমন একটি দিনের জন্য
আমি অপেক্ষা করে থাকবো।


০৩/০৪/২০১৯
মিরপুর, ঢাকা।