একটি ঘরের মধ্যিখানে চারটি প্রদীপ রাখা,
মিটমিটিয়ে প্রদীপগুলো জ্বলছিলো একসঙ্গে;
পরস্পরে বলছে কথা দুঃখ-সুখের রঙ্গে।
প্রথম প্রদীপ বলছে ডেকে,''আমি হলাম 'শান্তি'!
পৃথিবী আজ ভরে গেছে লোভে-ক্ষোভে-যুদ্ধে;
পারবে না কেউ আনতে কোন ক্ষাণিকটা প্রশান্তি।
তাইতো, আমি যাচ্ছি নিভে, আসবো না আর ফিরে;
তোমরা জ্বলো বন্ধুরা সব যাচ্ছি আমি সরে''।


দ্বিতীয়টি উঠলো বলে, ''আমি যে ভাই 'বিশ্বাস'!
আমায় নিয়ে মানুষ বাঁচে তাই অপরিহার্য।
কিন্তু, মানুষ চলছে আজি অবিশ্বাসের রাজ্যে;
ইন্দ্রিয়হীন, অনুভূতি নেইকো কারো মনে।
তাইতো, আমি যাচ্ছি নিভে, আসবো না আর ভাই।
তোমরা সবাই বেঁচে থাকো এইটুকুনই চাই''।


তৃতীয়টি ডেকে উঠে হঠাৎ করে, ''ওরে!
আমি হলাম 'ভালোবাসা' এই পৃথিবীর মাঝে।
কিন্তু, মানুষ বুঝছে না যে গুরুত্বটা কি যে?
একপেশে সব ভালোবাসায় আজকে তারা মত্ত।
তাইতো, আমি যাচ্ছি নিভে দাও বিদায় এই সাঁঝে;
বাঁচতে আমি চাই না যে আর হিংসাতে-ঈর্ষাতে''।


এই বলে সব একে একে তিনটি প্রদীপ নেভে;
অন্ধকারের গহীন ছায়ায় ডুবলো চরাচর।
এমন সময় একটি বালক ঢুকলো যে সেই ঘরে।
প্রশ্ন করে ক্ষোভের সাথে, ''ঘর কেনো আন্ধার?
জ্বলছে না ক্যান তিন প্রদীপের সলতেগুলো আর?
আজকে কেনো এমন হলো? কিসের অভাব তাদের''?
এই বলে সে কাঁদতে লাগলো ক্ষোভে উচ্চস্বরে,
''অন্ধকারে একলা ঘরে থাকবো কেমন করে''?


চতুর্থ সেই প্রদীপখানি তখন হেসে বলে,
''বালক, তুমি অন্ধকারে কেঁদো নাকো আর।
আমিই হলাম এমন প্রদীপ 'আশা' আমার নাম;
প্রত্যাশাতে জ্বলছি নিতি নিজের আপন তেজে।
শক্তি দিয়ে শক্ত করে আমায় ধরো হাতে,
আমার আলোয় জ্বালিয়ে দাও নিভন্ত সব দীপ।
বুকের ভেতর একটুখানি আশা যদি জ্বলে;
তখন শান্তি, বিশ্বাস আর ভালোবাসার জ্যোতি
উঠবে জ্বলে ভুবন মাঝে, কাটবে অন্ধকার;
আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে দেবে নিভন্ত দীপগুলো''।


০৭/০৪/২০২১
মিরপুর, ঢাকা