আজ ২৬/০৭/২০১৯ তারিখে ঢাকার আবহাওয়া ছিলো শ্রাবণের বৃষ্টিময় একটি দিন। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী 'বাংলা কবিতার আসরের কবিতা পাঠ ও আড্ডা' অনুষ্ঠান যথারীতি বিকেল ৪ টায় আরম্ভ হয়। আজকের আসরের আসরপতি (সভাপতি) ছিলেন কবিতার আসরের বয়োবৃদ্ধ হলেও, মানসিকভাবে তরুণ ও প্রাণচঞ্চল কবি খায়রুল আহসান। আসর সঞ্চালনা করেন চিরতরুণ কবি মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান।


দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য আসরের অনেক কবিই মোবাইলে উপস্থিত না থাকতে পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ আফশোস করেছেন। তবুও, বিরূপ আবহাওয়াকে অবহেলা করে কবিতাপ্রেমিক এবং বাংলা কবিতার আসরকে ভালোবেসে বেশ কয়েকজন কবি বৃষ্টিজলে ভিজেই মিরপুরের আলোঘরে উপস্থিত হয়েছেন। বাংলা  কবিতার আসরের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি অভিনন্দন ও ভালোবাসা।


উপস্থিত কবিগণ তাদের পরিচিতি তুলে ধরতে গিয়ে আপনজনের মতো নিজের জীবনের. এমন কি পারিবারিক জীবনের কথাও নির্দ্বিধায় পরস্পরের সাথে আদানপ্রদান করে গিয়েছেন। এতে আমাদের মাঝে আত্মিক সম্পর্কের সুদৃঢ়তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা কবির জীবনের অনেক অজানা কাহিনী শুনে কবিকে আরো ভালো করে হৃদয়াঙ্গম করতে পেরেছি। এরূপ আলোচনা ও আড্ডা চলে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত। অতঃপর, আজকের কাব্যভাবনার আলোচনার প্রধান বিষয় 'বর্ষা ও বাংলা কবিতা' নির্ধারণ করে উপস্থিত সকল কবিকে এ ব্যাপারে আলোচনা ও কবিতা পাঠের কথা বলা হয়। উপস্থিত প্রায় সকলেই মনমুগ্ধকর তথ্যবহুল বক্তব্য তুলে ধরেন এবং তাঁদের স্বকণ্ঠে  স্বরচিত কবিতা পাঠ এবং কবিতা ও কাব্য ভাবনা নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় কবিতার আসরকে মুখরিত করে তুলেন। বর্ষণমূখর দিনে বর্ষাকে অবলম্বন করে কবিতা চলে মাগরিব পর্যন্ত। নামাজের পর আবার শুরু হয় কবিতা পাঠ এবং বাংলা কবিতার ইতিহাসের আলোচনা-পর্যালোচনা।


বৃষ্টির রাতে সকলেই বাড়ি যাওয়ার জন্য উসখুশ করতে থাকে। তাই, আলোঘর থেকে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী রেষ্ট্রুরেন্টে যাই। হালকা নাস্তা এবং চা পানের শেষে পরস্পর বিদায় নিতে গিয়ে রাস্তার পাশের ফুটপাতে আবারও আড্ডায় মেতে উঠি। কবিদের ভালোবাসার সম্পর্ককে ছিন্ন করে যেন কেউই যেতে চান না। তবুও এক সময় আমরা যার যার গন্তব্যের দিকে যেতে বাধ্য হলাম।


অনেকদিন পর কবিতার আসরের অনুষ্ঠান হওয়ায় কেউ কেউ তাদের মনের কষ্টের কথা জানান এবং বলেন নিয়মিতভাবে এবং কমপক্ষে প্রতি মাসে এরূপ আনন্দঘন অনুষ্ঠানকে চালিয়ে নেয়ার জন্য। এতে উপস্থিত সকলেই উৎফুল্লতার সাথে সম্মত হয়েছেন।


কবিতার আসরে উপস্থিত কবিগণ হলেন-  সর্বকবি, অনিরুদ্ধ বুলবুল, মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান, মোহাঃ রাসেল রানা, জিল্লুর রহমান জিম, মোঃ আব্দুস সামাদ (আজাদ), খায়রুল আহসান, রুনা লায়লা, মোঃ তুষার ( কবি মোঃ আঃ সামাদ (আজাদ)-এর স্কুল পড়ুয়া সন্তান) প্রমুখ।


কবি অনিরুদ্ধ বুলবুল আজকের কবিতার আসরে একটি প্রস্তাব রাখেন, আগামীতে বাংলা কবিতার আসরের একটি আন্তর্জাতিক বাংলা কবিতার আসরের অনুষ্ঠান করার জন্য। যাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত আসরের কবিগণ; বিশেষ করে ভারতবর্ষের কোলকাতার কবিদেরকে নিমন্ত্রণ দিয়ে সেই আসরে উপস্থিত করে কবিতার আসরকে আরো প্রাণবন্ত ও ফলপ্রসু করে তোলার কার্যকর ভূমিকা রাখার।


আজকের আসরপতি কবি খায়রুল আহসান তাঁর আসর-সমাপ্তি বক্তব্যে বাংলা কবিতার ওয়েবসাইটের প্রিয় এডমিন কবি পল্লব আশফাক এবং তার গৃহবন্ধুকে কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। যাদের সুন্দর ইচ্ছা ও  প্রচেষ্টায় বাংলা কবিতার ওয়েবসাইটের মতো একটি শুধুমাত্র কবিতার ওয়েব প্রোটাল সৃষ্টি হয়েছে। যার মাধ্যমে অনেকেই তার সুপ্ত কবি-প্রতিভা বিকশিত করার সুযোগ পাচ্ছে।


২৬/০৭/২০১৯
মিরপুর, ঢাকা।


ছবিতে (বামদিক থেকে)- সর্বকবি খায়রুল আহসান, মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান, কবীর হুমায়ূন, রুনা লায়লা, অনিরুদ্ধ বুলবুল, জিল্লুর রহমান জিম, মোঃ আঃ সামাদ (আজাদ) ও মোহাঃ রাসেল রানা।