সময় কখনো স্থবির থাকে না,
নদীর জলের মত ফল্গুধারায় সে চলে যায়।
কখনো সখনো সে হিংসটে হয়ে উঠে;
মুছে দিতে চায় অকরুণভাবে তার পাতা থেকে
জগতবিখ্যাত মানুষের নাম; যারা ছিলো ভবে-
সাহিত্যে, শিল্পকলায়, চিন্তা-চেতনায়,
ধর্মে কর্মে মানুষের ভালোবাসায়।


হাজার বছর ধরে চলমান এ বাংলা সাহিত্য,
কতো চড়াই উৎরাই পেরিয়ে,
কতো রূপ অদল-বদল করে করে,
কতো ঋতু বৈচিত্রের মধ্য দিয়ে পরিভ্রমণ শেষে
অবশেষে, টিকে আছে এই শ্যামলিমা বাংলাদেশে।


চির বিদ্রোহী এ বাংলা ভাষা!
জন্ম থেকেই বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে গেছে সে
স্বপ্রতিভায়; আলোকিত করে অন্ধকার পথ
আজো টিকে আছে গৌরবের মহিমায়।


জন্ম তার চর্যাপদে-
কবির চিন্তা-চেতনা, উপদেশ বাণী
দুঃখ ও সুখের ছোট ছোট কথার কাহিনী
কবিতায় জেগে উঠতো টুংটাং স্বরে।
উঁচুতলার লোকেরা সহজে নিতো না মেনে.
সংস্কৃত ভাষার ছায়ায় যাদের ছিলো বসবাস।
তারপুর, শুরু হলো, মুসলিম কাল,
সুবিধাভোগীরা ফারসীতে পুনরায় ধরেছেন হাল;
অবহেলিত বাংলা সাধারণ মানুষের কাছে
নিশ্চুপে রহিলো ভালোবাসা নিয়ে, চিরকাল।
ইংরেজ এলো,
তারা সকলেই ইংরেজীর মহিমা ছড়ালো,
সুবিধাভোগীরা তাতেই আবার মন মজালো।


সাধারণের মুখে ভাষা-
ভালোবাসতে, ঝগড়া করতে যা প্রতিদিন ব্যবহার হতো,
উঁচুশ্রেণির মানুষের কাছে তা হতো অবহেলিত ।


বিদ্রোহে জন্ম হয়েছে যার,
চির বিদ্রোহী সে; এই তার অহংকার!
বাংলা ভাষা আগুন জ্বালালো স্বকীয় প্রভায় মহান উল্লাসে,
পরাজিত হলো সব;
অত্যাচারীকে অবহেলা করে; তাই, করি আজ উৎসব!
রক্তের মতো প্রবাহমান
ভাষার শিরায় শিরায়;
সুরে ছন্দে পদ্যে গদ্যে সাহিত্যে কবিতায়।


১২/০৭/২০১৯
মিরপুর, ঢাকা।