প্রথমে বন্দনা করি পূবে ভানুস্বর।
একদিকে উদয় ভানু চৌদিকে প্রহর॥
পশ্চিমে বন্দনা করি মক্কা ও মদিনা।
তাহার পরশ পেলে পবিত্র হয় সিনা॥
উত্তরে বন্দনা করি হিমালয় পর্বত।
কতো যে বিস্ময়কর আরেক জগত॥
দক্ষিণে বন্দনা করি বঙ্গোপসাগর।
নীলাম্ভুর জলরাশি বহে নিরন্তর॥
অতঃপরে, বন্দি' যাই মা-বাবার চরণ।
যাঁদের করুণা পেয়ে পৃথিবী ভ্রমণ॥
আল্লার নামেতে বলি বিগোর পুঁথি ভাই।
উপস্থিত সবাকারে সালাম জানাই॥
ভুতুম নামের ভুতে বল্লো যে আমারে।
পুঁথি পাঠ করতে হবে বিগোর মাঝারে॥
তাইতো কলম ধরি ভেবে-চিন্তে বহু।
পুঁথি লেখা গুরুকাজ করিলাম শুরু॥
বিগোতে আমার গুরু জয়যাত্রা নাম।
তাঁর তরে রেখে যাই হাজার সালাম॥
অন্য সুরে বলি এবার শোনেন দিয়া মন।
ব্রডকাস্টিংয়ে আছেন যত প্রিয় সূধীজন॥


শোনেন, শোনেন ও ভাই,
বলে যে যাই পুঁথি কাব্যের ছন্দে;
এ বিগোতে কত মানুষ আছে ভালো-মন্দে,
তাতো জানেন সবাই। (২)
তবুও জানাই ক্ষুদ্র জ্ঞানী আমি,
কেহ কেহ বিগো-এ্যাপে কাটায় দিবস-যামী,
তারা নিদ্রাহারা। (২)
ছন্নছাড়া ব্রডকাস্টিংও করে,
নির্ঘুমতায় তাদের চোখে কালো কালি পড়ে,
সেদিক নাই যে খেয়াল। (২)
বড়োই বেহাল চেহারাখান তার,
রূপসজ্জার বদৌলতে দেখায় চমৎকার,
সেই না রূপের ধারায়। (২)
মন যে হারায় কতো যুবক-বুড়া,
ঘরের বউকে দূরে ঠেলে মত্ত হয় যে ওরা,
এমন কাজ-কারবার। (২)
ঘটে বারবার কি বলবো রে ভাই!
রক্ত বেচার অর্থ দিয়ে ড্রাগন বিলায়,
এবার অন্য কথা। (২)
বলি হেথা শোনেন দিয়া মন,
বিদেশেতে থাকেন যারা তাহাদের বর্ণন,
বলি পুঁথি কথায়। (২)
তারা সবাই বাবু সাহেব ভাবে,
ডলার, পাউণ্ড, ইয়েন, রিয়াল যেন সবাই চাবে,
এমন ভাবটি দেখায়। (২)
কথায় কথায় নিজেরাই যে ভাবে,
বাংলাদেশের সবাই থাকে ভাতেরই অভাবে,
মরে রাস্তা-ঘাটে। (২)
হাটে মাঠে সারি সারি লোকে,
উন্নয়নের ধারাখানি দেখে না দুই চোখে,
আবার অন্যদিকে। (২)
বিদেশেতে যাদের বসবাস,
কামলা বলে বিগোর মাঝে করে পরিহাস,
বড়োই দুঃখের কথা। (২)
বলি যথা ভালো-মন্দ যতো,
গালিবাজের কাহিনীটা বলি অন্ততঃ
তারা দলে দলে। (২)
গ্রুপে চলে দলবদ্ধ হয়ে,
গালাগালি করলে নাকি জোস আসে হৃদয়ে,
তাইতো করে এমন। (২)
ও বন্ধুজন, বলি অন্য কথা,
কবিতার আসরের নামে চলে বাতুলতা,
কিছু বদলোক আছে। (২)
বিগোর মাঝে সুন্দর কথা বলে,
শয়তানিটা চতুরতায় চালায় যে কৌশলে,
তারা ব্রড চালায়। (২)
রাতের বেলায় গান কবিতার নামে,
নষ্টামী আর ভ্রষ্টামিতে মাতে যে কুকামে,
কেহ বললে কিছু। (২)
নেয় যে পিছু তক্কে তক্কে থাকে,
এখানে সেখানে মিথ্যা বলে যাকে তাকে,
বলি, আসল কথা। (২)
ভগ্নি-ভ্রাতা শোনেন দিয়া মন,
মন্দ নহে এ বিগো-লাইভ বলেন সর্বজন,
শুধু ব্যবহারে। (২)
যে জন পারে সঠিক প্রতিকার,
তারই জন্য বিগোর আসর হবে চমৎকার,
বলেন বিজ্ঞজনে। (২)
কানে কানে আমি বলি ভাই,
দ্বন্দ্ব ছাড়া চললে বিগো সুখের সীমা নাই,
তাইতো কবীর বলে। (২)
সকল ভুলে দূরকে আনো কাছে,
বন্ধুত্বের রশি বান্দো পরস্পরের মাঝে,
দেখবে কতো মজা! (২)
নয়তো সোজা সঠিক বন্ধু পাওয়া,
পয়ার ছন্দে গাইবো ভুলে খাওয়া -নাওয়া,
শোনের অন্য সুরে।


লক্ষ লক্ষ টাকা পায় শত রিসেলার।
সুন্দরী, এডমিন এবং যত রিক্রুটার॥
কিছু কিছু লোক আছে এমনি এমনি খায়।
পরের রমণী দেখে টকটকিয়ে চায়॥
কেহ আবার পণ্ডিত সাজে যেন বড়ো জ্ঞানী।
সত্য কথা বললে তারা হালে পায় না পানি॥
কারো কারো ঝগড়া করা যেনো বড় গুণ।
গাঙের পানিতে ঢালে জলন্ত আগুন॥
ছায়ার সাথে কথা বলে যুদ্ধ করে আর।
ছায়াকেই ঘৃণা করে বড়ো চমৎকার॥


কেহ কেহ কথা বলে পেতে টাকা কড়ি।
বলে তারা ইমো এ্যাপে, আমি যে সুন্দরী॥
কথা বলে, ক্যামেরাতে ইনিয়ে বিনিয়ে।
বাহানার রঙ্গরসে এটা ওটা নিয়ে॥
জটিল ও কূটিলতা নেমে আসে ধীরে।
পিরিতির রীতি ভুলে স্বার্থকেই ঘিরে॥
কিছু কিছু নারী আছে বিগোর মাঝার।
লক-কলে ডেকে দেখায় রূপের বাহার॥
প্রেম প্রেম কথা বলে বাহানার ছলে।
হাসি মুখে সাধু সাজে মন্দ তলে তলে॥
উপরেতে জ্ঞানী-গুণী বড়োই ফিটফাট।
ভেতরেতে মাকাল ফল যেন সদরঘাট॥
উপহার ও টাকার তরে করে কানাকানি।
হাছায় ও মিছায় বলে দুঃখের কাহিনী॥
হাজার টাকায় হয় না তাদের লক্ষ টাকা চাই।
পুরুষের টাকা যেন খোলামকুচি ভাই॥
রান দেখানোর ফন্দিবাজ বড়ো খেলোয়ার।
বেকুবেরা ফান্দে পড়ে কান্দে জারেজার॥
অতঃপর, বাজারেতে হাড়ি ভাঙে তারা।
রান দেখিয়া টাকা-কড়ি বিলায়েছে যারা॥
ডলার-পাউণ্ড-ইয়েন-রিয়াল গিফ্ট করে যায়।
সব হারিয়ে পরিশেষে করে হায়, হায়॥
এ পুঁথি শুনে তুমি দিও না ভাই গালি।
সাবাস সাবাস বলো, জোরে মারো তালি॥


বিগোর মাঝেতে আছে কতো ধনীলোক।
গাড়ি বাড়ি নারী আছে, নাই তাদের শোক॥
শেরাটনে নাস্তা করে, লাঞ্চ রেডিসনে।
ডিনার খায় সোনারগাঁয়ে বলে জনে জনে॥
যতো আছে বুড়া-বুড়ি বয়স কমে না।
সত্যি কথা বললে তাদের আলাপ জমে না॥
তিন সন্তানের বাপ বলে বিয়া করে নাই।
দাড়ি মোছ সাদা সব মিছা ছাড়ে নাই॥
বুড়িরা সুন্দরী হয় ঘন মেকাপ মেখে।
জল দিয়া ধোও যদি হয়ে যায় ফিকে॥
রাজার নন্দিনী তারা সোহাগী আদুরি।
নাচে গানে কলাবতী আহা মরি মরি॥
আজব বিগোতে সব পাগলের খেলা।
লক্ষ হাজার পাগল এসে মিলায়েছে মেলা॥
রঙিন বিগোর এ্যাপে আনন্দের দেশ।
সবে বলেন এক সুরে আহা বেশ বেশ॥
কতেক পাগলী আসে বিন্সের আশায়।
কেউ কেউ ড্রাগন আর ডায়মণ্ড চায়॥
উতলা হয়ে কেউবা বিগোর সূত্র ধরে।
হোয়াটসআপে কল দিয়ে নিমন্ত্রণ করে॥
যে জন পড়েছে ফাঁদে বাড়ে তার জ্বালা।
কবীর বলে বেশি বেশি হইও না উতলা॥
মনে রাখবা এই কথা বলি সবার ঠাই।
বাস্তবের বন্ধু ছাড়া অন্য বন্ধু নাই॥
ভুলভ্রান্তি হয় যদি দিয়েন মাফ করে।
সকলের দোয়া চাই আমি করজোড়ে॥
শেষ করি পুঁথি পাঠ বন্ধুরা এবার।
ভুল-ভ্রান্তি মাফ চাই বলি বারে বার॥