মেয়েটি বিয়ের কনে,
লাল শাড়ি পড়া নেই, পার্লারের টাচ নেই।
গলায় ফুলের মালা, মাথায় টিকলি, কানে হালকা অলঙ্কার।
ভারতীয় বিয়ের সকল প্রথা, নিয়ম-কানুন,
অবহেলা করে জড়ায়েছে গায়ে,
প্যান্ট, সার্ট, স্যুট; প্রিয়তর পোষাক তার।
ভারতীয় বিয়ের চিরায়ত পোষাক-
জমকালো কাতানের শাড়ি
অথবা সোনালি, রূপালি কারুময় লেহেঙ্গা
পরেনি সে বিয়ের আসরে।
বসে নিকো মাথা নিচু করে;
মানুষের মতো শিরদাড়া সোজা হয়ে আছে তার।
হেঁটে গেছে, আলাপ করেছে স্বজনের সাথে,
অন্য দশদিন করতো যেমন।
নারীর শক্তির বার্তা
সে তুলে ধরেছে পোষাকে-আশাকে, ভাবে ভঙ্গিমায়,
আধুনিক ফ্যাশন অঙ্গনে।
পশ্চিমের দেশগুলোর মেয়েরা
ইদানিংকালে, শুভ্র গাউনের স্থলে
বিয়ের পোষাকে ডিজাইন করেছে সাদা প্যান্ট-শার্ট, স্যুট;
বিয়ের পোষাক সম্ভারে এক বিপ্লব;
এইবার, এ ভারতেই তা' হোক।


'ভারতীয় কনে প্রথা ভেঙে নিজস্ব ইচ্ছার প্রকাশ করেছে,
এ যে নারীর চরম দুঃসাহস!
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে তা কি মেনে নেয়া যায়'?
পুরুষেরা ভাবে, নারীর স্বাধীনতা নিরাপদ নয়।
তাই, ছিঃ ছিঃ উচ্চারণে জেগে উঠে চারিদিক,
প্রথা ভাঙার দুঃসাহসিক দোষের কারণে
সমালোচনার তীর ছুড়ে দেয় মেয়েটির দিকে;
অপবাদের খড়গ তুলে ধরে ঘাড়ের উপরে।
নারী স্বাধীনতার কথায় যারা সোচ্চার,
তারাও, মিনমিনে স্বরে বলতে থাকে-
'কখনো দেখেনি আগে
ভারতীয় বিয়েতে এমন বৈপ্লবিক পোষাক-আশাক'।


বন্ধুরা বলে, 'ঠিক করেছো, অভিবাদন হে নারী!
কথায় না কয়ে, কর্মে দেখিয়েছো, এ নারীরা সব পারি'।
শক্তিশালী যে সব নারী, আধুনিক মনস্ক যারা,
যুগে যুগে নারীর চেতনে এনেছে বৈপ্লবিক ধারা
নারীর আদর্শ তারা।
প্রথা ভাঙ্গার দুঃসাহস নারীর শক্তি ও সৌন্দর্য বৃদ্ধ করে।
সকল উদ্ভিগ্নতা পরিহারে মনের কথা বলে উঠো নারী
বাঁধার দেয়াল করে ভূলুণ্ঠিত।
নারীর ইচ্ছার বিকশিত হোক
কুসংস্কারাচ্ছন্ন ভারতের ভঙ্গুর সমাজ।
যে আগুন জ্বলে উঠেছে দপ করে
সানজানা ঋষির হাত ধরে;
সমালোচনার ধুলো-বালি-ছাইয়ে
তা যেন নিভে না যায় ফস করে।


২৪/১১/২০২০
মিরপুর, ঢাকা।