গুজবের কোন হাত নেই, পাও নেই, চোখ নেই,
নেই তার মুখ আর দাঁত;
এমন কি তার নেই স্পর্শকাতুরে চামড়া।
তবুও, সে বাঁচে প্রবল প্রতাপে,
নিজের ভেতরে নিয়ে আসুরিক শক্তি।
অন্ধজনেরা বন্ধঘরেতে বসে, দুঃসময়ের কালে,
গুজবের প্রতি রাখে অনন্য সত্যের মহাভক্তি।
যখনই সত্য মুখ খুলিবার পায় না কোনই পথ,
তখন সত্যকে টুঁটি চেপে ধরে,
গুজবের হাত-পা গজায়, মনে বাড়ে হিম্মৎ;


রাখালের সেই বাঘের মতোন হামলে পড়ে সে;
অবশেষে, গরু ছাগল হাঁস মুরগী ভেড়া- যতোকিছু আছে,
সবকিছু খেয়েদেয়ে করে সে নিঃশেষ।
সত্য যখনই তার সদর দরোজা বন্ধ করে দেয়
বাঁধা-নিষেধের খিল এঁটে দিয়ে;
তখন গুজব খিড়কির পথে ভ্রমণের পথে যায়-
কান থেকে কানে, ঘর থেকে ঘরে, হাটে-বাজারে;
এখানে সেখানে ঘুরে বেড়ায়; সমস্ত বিশ্বময়।
''এই শুনছেন, কী হইছে...'' এমন কথার নাজুকতা নিয়ে,
করোনার মতো ছুটে চলে সে
এ কান থেকে ও কানে প্রবলতর প্রতাপে;
কোভিড-নাইনটিন ভাইরাসের মতোন
বাজকীয় বেশে হেঁটে যায় দীর্ঘপথ;
শহরে বন্দরে গ্রামে গঞ্চে দেশে ও বিদেশে, বিশ্বময়;
গুজবেরা কখনোই হতদরিদ্র এবং নিঃস্ব নয়।


সত্যকে যতোই করবে দমন মজবুত হাতুড়ির ঘায়ে;
থেতলানো ওই সত্যের গা থেকে,
তার কালচে রক্তের কষ থেকে, গুজবের সৃষ্টি হবে।
সত্যেরা হারিয়ে গেলে, সৃষ্টি হয় উত্তরহীনতার পরিবেশ,
গুজবেরা তখন স্বমহিমায় জন্ম দেয় অনাসৃষ্টি।
আইন করে বা ফাইন করে
গুজবকে রোখা যায় নাতো কখনোই।


গুজবে এখন রেললাইন পোড়ে,
তার মহিমার গুণে মসজিদে মন্দিরে থানায় থানায়
আগুন জ্বলে দাউদাউ, গুজবের আগুন!
গুজবেরা আনে সত্যের কঠিন সময়ের কালে
উচ্ছৃঙ্খল দুর্বত্তের মন ও মননে ভয়ংকর ফাগুন।


৩১/০৩/২০২১
মিরপুর, ঢাকা।