সূর্য উঠার প্রাক্কালে, লালচে আলোর জাল ছিঁড়ে
কাকপাখি জেগে উঠে। টিনের চালের কড়কড়ে
ঢেউ তোলা ভাঁজেভাঁজে তাজা রুটির টুকরো ঘিরে
ওরা ওড়াওড়ি করে। সূক্ষ্ম, তীক্ষ্ণ নখের আঁচরে
সঙ্গীতের সুর তোলে আশেপাশে, সেই রেস্তোরার।
কেউবা বিরক্ত হয়; কেউ কেউ বলে, 'খুব ভালো'।
ঘুমখোর অলসেরা বলে, 'হায়! এ-তো অত্যাচার'!
আর সবে- 'কাকেদের জন্য দেখি প্রভাতের আলো'।


প্রত্যহ রেস্তোরাঁ খুলে ঘর ঝাট দেয়া; অতঃপর,
রুটি তৈরী করে; ছিঁড়ে ছিঁড়ে ছুঁড়ে দিতেন দোকানি।
রাজ্যের কাকেরা জানে এইসব খাদ্যের খবর;
সূর্য উঠার প্রাক্কালে তারা ভোগ করে মেজবানী।
উদরপূর্তির যুগে দেখি, ভাবে নাতো কেউ আর-
'মানুষের কাছে আছে সব পাখিদের অধিকার'।


০১/০৭/২০২২
মিরপুর, ঢাকা।


(বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই আমরা গ্রাম ছেড়ে ঢাকার মালিবাগে কাকার বাসায় চলে আসি। আমাদের বাসার সামনেই একটি মিষ্টির দোকান ছিলো। সেই দোকানে পরোটা, ভাজি আর মিষ্টি বিক্রি হতো। দোকানি ভদ্রলোক প্রতিদিন তার দোকানে তৈরি করা প্রথম রুটিটিসহ বেশ কিছু রুটি ছিঁড়ে ছিঁড়ে ভোরবেলায় দোকানের টিনের চালে ছুঁড়ে মারতেন। আর মুখে আওয়াজ করতেন, 'আয়, আয়, আয়...' অজস্র কাকের জমায়েত হতো। সে দোকানের 'বুন্দিয়া' এতো মজার এবং রসালো ছিলো যে, এখনও বুন্দিয়া দেখলেই সেই কাকার (নামটি মনে নেই) কথা মনে পড়ে। তিনি আমাকে অনেক আদর করতেন। চার আনার বুন্দিয়া কিনতে গেলে অনেকগুলো দিতেন। সেই স্মৃতির আলোকে লেখা।)