বন্দুকের নল ধরে সীমান্তরক্ষীরা
আজো কি দাঁড়িয়ে আছে কাঁটাতার পাহারায়?
বিশ্বের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে মৃত্যুর বিভীষিকা!
পৃথিবী এখন বিশীর্ণ স্থবির হয়ে পড়ে আছে।
গহীন অন্ধকারের অতল গহ্বরে
মুখ থুবড়ে পড়ে আছে মানুষের চাকচিক্য,
অহমিকা, আত্মসুখের দাম্ভিক প্রচারণা।
বর্তমানে, মানুষের মুখে উচ্চারিত শব্দাবলী-
লকডাউন, কোয়ারেন্টেন, আইসোলেশন,
করোনা, কোভিড ঊনিশ, চীন, হুবেই, উহান...।
রাজনীতি, অর্থনীতি, নষ্ট-ক্ষমতার ভারসাম্য,
আমদানী-রফতানি, ডলার-পাউন্ড, টাকা-রূপী,
সিআইএ, কেজিবি, মোসাদ, র, আইএসআই,
ইত্যকার বিষয়ের জয়-পরাজয় নিয়ে
চায়ের দোকানে উত্তপ্ত আলাপে কাটায় না সময়।


কোভিড ঊনিশ ভাইরাসের রাজকীয়-মুকুট ছবিতে
ক্রমান্বয়ে ছেয়ে গেছে সমস্ত পৃথিবী,
বাড়ছে মৃতের সংখ্যা হুহু করে, জ্যামিতিক হারে।
সামাজিক দূরত্বের নামে মানুষেরা এখন বিচ্ছিন্ন;
অথচ, সকলেই আজ পরস্পর অভিন্ন সত্ত্বার,
মানসিকভাবে, চিন্তায়, চেতনায়, ভাবনায়।
এক দেশের একজনের মৃত্যুতে
আরেক দেশের মানুষেরা উদ্বিগ্ন হয়;
একজনের আক্রান্তের সংবাদে অন্যজন হয় আতঙ্কিত।


এই পৃথিবীতে মানুষের টিকে থাকার লড়াইয়ের  
প্রাথমিক সূত্রপাত হয়েছিলো যুথবদ্ধ প্রচেষ্টায়।
কিন্তু, স্বার্থান্বেষী মানুষেরা জাতিতত্ত্ব, ধর্ম-বর্ণের খোলসে
বিভাজনের রেখা ভয়াবহভাবে সম্প্রসারিত করে;
কলমের দাগ কেটে একই মাটিকে করে দেয় তারা
ভিন্ন দেশ, দূরের দেশ, পরের দেশ।


একটি মাত্র ভাইরাস!
মাত্র একটি ভাইরাস, কোভিড ঊনিশ- করোনা!
কী অবলীলায় বুঝিয়ে দিলো পৃথিবীর মানুষেরে,
কতোই ঠুনকো নিরাপত্তা, বেঁচে থাকার সামর্থ!
কাঁটাতার, সুউচ্চ সীমান্তদেয়াল আটকাতে পারে না
মানুষ প্রজাতির আতঙ্কভরা মৃত্যুকে।
কোনো ভাইরাস মানে না হেয়ালীপনার বাঁধা;
ভাইরাসের পাসপোর্ট-ভিসার প্রয়োজন নেই।
এই কোভিড ঊনিশ দেখিয়ে দিয়েছে
মানুষেরা কতোই নাজুক জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে।
গুদাম ভর্তি আধুনিক মারণাস্ত্র, গোলাবারুদ, ট্যাঙ্ক,
মেশিন গান, কালাসনিকভ, ব্যালেস্টিক মিশাইল,
আকাশের থালা ভর্তি স্যাটেলাইট,
জীবনের নিরাপত্তা দিতে পারে না একটুও।
এসো, যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা পরিহার করি,
এসো, অস্ত্রের বাজার নিতান্ত সীমিত করি,
এসো, টিকে থাকার জন্যই যুথবদ্ধ জীবনের পথে হাঁটি।
কোভিড ঊনিশ- করোনা ভাইরাস,
সেই সুসংবাদ নিয়ে এলো পৃথিবীর মানুষের কাছে।


২৯/০৩/২০২০
মিরপুর, ঢাকা।