পৃথিবীতে এক ঝড় হয়ে গেলো ঘূর্ণিবায়ুর তোড়ে,
লণ্ডভণ্ড হয়ে গেলো সব সমুদ্র-হিমাচল!
থেমে গেল তাপ, সমস্ত আলো, সূর্যের প্রখরতা;
নেমে এলো শীত সাইবেরিয়ার জমাট বরফ গলে।
নিত্যকালের মৃত্যু ও জরা হয়ে গেল অবসান,
অবশেষে এসে দাঁড়ালাম শেষে অদ্ভুত এক দেশে;
ক্রন্দনরত সেথা আছে যতো সাদা-কালো মানুষেরা
বিনীত বদনে; অবিনশ্বর প্রথম আলোর কাছে,
করজোড় হয়ে সন্ত্রস্ততায় অমৃতের সম্মুখে।
ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায় সব প্রভাত বেলার আলো,
চারিদিকে জমে ভয়সঙ্কুল ভীষণ রকম কালো।
অন্ধকারের কোলাহল নামে সীমার অন্তরালে,
জেগে উঠে বাণী গুরুগম্ভীর অনাদি অনন্তের,
শান্ত-শীতল কর্কশস্বর অমৃত কন্ঠ থেকে-
'আমিই অনাদি, আমিই অন্ত, আমিই চিরঞ্জীব
অমৃত সত্ত্বা, অন্তহীনতা, গ্রহ নক্ষত্র-জ্যোতি,  
সুন্দর ভোর, সূর্যাস্তের, রাত ও দিনের প্রভূ,
সবুজ শ্যামল বৃক্ষরাজীর ধরণীর স্রষ্টা,
তিল পরিমাণ কর্মফলের এবার বিচার হবে;
ভালো ও মন্দ, পাপ ও পুণ্য জগতে করেছো যতো'।


হে অপরিসীম ক্ষমার মালিক, গাফুর ও রহমান!
তোমার দয়ার ভাণ্ডার থেকে তিল পরিমান দিয়ে
ত্বরিতে তড়াও বিনীত হৃদয়ে প্রগাঢ় কামনা করি।
তোমার সৃষ্টি এই পৃথিবীর কামুক স্বভাব দোষে
মোহ-লালসায় মগ্ন ছিলাম অবল-অবোধরূপে;
ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীর নিকৃষ্ট আবিল আবর্জনা।
কুয়াশাচ্ছন্ন নিদারুণ কালে তোমার করুণা ছাড়া
বিদ্বেষমন্য, মন্দ-অসৎ, পাপী ও বিপথী যারা;
বিচারের তুলাদণ্ডে পার হতে কখনো পারবে না।
অপরাধীর কলঙ্ক চিহ্ন মুছে দাও ক্ষমা করে,
অপরাধ যত বিশাল তোমার বিপুল ক্ষমার চেয়ে
নিতান্ত কম; এই বিশ্বাস অন্তরে গ্রন্থিত।
উত্তাল নদী পার করি নিও এ আমার প্রার্থনা;
তুমি সুন্দর! চির ক্ষমাশীল, সদয়, করুণাময়।


১০/১২/২০২২
মিরপুর ঢাকা।