ম্যাসেঞ্জারে নক করেছে তখন নিশুত দুপুর রাত,
চারিদিকে নিঃঝুমতা; ঘুমায় আকাশ, ঘুমায় চাঁদ।
রাতপোহানো কবি জেগে, কাব্য-নেশায় দিগ্বিদিক,
শব্দ খুঁজে, ছন্দ খুঁজে, উপমা তার হয় না ঠিক।
তবুও প্রেমের সূত্র ধরে শব্দ সাজায় পরস্পর,
কাব্যকথার চাষ করে যায়, কাব্যচাষীর অনুচর।
স্মৃতি খুঁজে, ব্যথা খুঁজে, খুঁজে অতীত জীবন ক্ষণ,
ভালোবাসার শক্তি খুঁজে, নিমীলিত দু'নয়ন।
টুং টাং টুং শব্দ হলো মোবাইলে অকস্মাৎ!
ম্যাসেজ এলো ম্যাসেঞ্জারে কাব্য লেখায় দিলো বাদ।


দুটি অক্ষর, অর্থবিহীন, ম্যাসেঞ্জারে শুধুই 'হাই'
তখন থেকেই কথা শুরু, পরিচয়ের নাই বালাই।
লিখে দিলো, হাই, ও কবি! কেমন আছো এই রাতে?
ঘুমাওনি ক্যান? এতো রাতে জেগে আছো কার সাথে?
এমনি আবোলতাবোল কথা, কেটে গেলো আস্ত রাত,
মসজিদে ঐ আজানধ্বণি, পুবের আলোয় হয় প্রভাত।
এমন করেই প্রতি রাতে ম্যাসেঞ্জারে আসতো ছবি,
তারই সাথে কিছু কথা, যা লিখেছেন প্রেমিক কবি।
রবীন্দ্রনাথ, রফিক আজাদ, নজরুল বা নির্মলেন্দু,
কথায় কথায় আলো ছড়ায় রাত গগনে আকাশ-ইন্দু।
ছন্দ দোলায় তা' নেচে যায়, ভালোবাসার প্রচ্ছন্নতা,
নতুন করে সাজিয়ে তোলে কবি মনের সকল কথা।


এমনি করে  কাটে সময়, এমনি করেই মাস চলে যায়,
বছর শেষে ম্যাসেঞ্জারে হঠাৎ করেই বললে সে, হায়-
এসো, তবে দেখি করি, প্রাণের মেলা বইমেলায়,
অবশেষে পায় খুঁজে সে একাডেমির বটতলায়।
হাজার বছর খুঁজছে যারে আকাশ পাতাল মর্ত্যলোক,
মূর্তিমতী অপ্সরা আজ দেখতে পেলো কবির চোখ।
প্রিয়ার চোখের জ্যোতি এসে বাঁধলো তারে সুকঠিন,
বাঁধছে তারে শক্ত করে প্রেমের ডুরে দিনেকে দিন,
পাল্টে গেলো জীবন ধারা ছন্নছাড়া বন্যটার!
সব সাধুবাদ পাওনা যে তার ফেসবুকের ঐ ম্যাসেঞ্জার।


০৪/০২/২০২০
মিরপুর, ঢাকা।