সেদিন এক অনুষ্ঠানের সমাপ্তির শেষে,
কথার পিঠে কথা রেখে বলেছিলো সে-
'আপনার সাথে আমার কি কথা'?
এই ছিলো তার শেষ কথা; অকৃতজ্ঞতার বাতুলতা।
কী অদ্ভুত, মানুষের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের শক্তি!
অবিমৃষ্যকারিতার চন্দ্রাহত প্রাণের মতোন আর কিছু নাই,
পৃথিবীতে বারংবার ভুল করে যাই,
প্রতিবার সে ভুলগুলোকেই শোধরাতে চাই।


এখন সবকিছু স্বার্থ-টানে নষ্ট হয়ে গেছে-
ভালোবাসা, স্নেহ, নদী, বাতাস, প্রকৃতি;
নষ্ট হয়ে গেছে কামুকের প্রবল ছোঁয়ায়,
লোভীর প্রচণ্ড উচ্চাকাঙ্খার আবদেরে
বন্ধুত্বের অকৃত্রিম ভালোবাসা অস্বীকার করে,
নষ্ট হয়ে গেছে সে-ই মানুষের মতিগতি।
মানুষের হৃদয়ের প্রকৃতি জানে না কি সে?
হৃদয়ের দ্বীপে ফুল ফোটে, গন্ধ ছড়ায় অনন্ত অন্তরীক্ষে।


ঘটনাটি আদৌই রটনা ছিলো না, তাহলে এখন বলি-
জীবনের কোন এক সময় ঘরকুনো ছিলো সে,
আজ বিখ্যাত যে; অন্যদের পরিমণ্ডলে।
বদ্ধ ঘরের অতলে বসবাস; বন্দী ছিলো তারই জীবন,  
দেয়ালই ছিলো তার দিগন্তের সীমারেখা,
ইট-পাথরের গড়া ছাদ ছিলো অমোঘ আকাশ।
জতুগৃহের উত্তাপে বসবাস ছিলো বার মাস,
দুঃখের জগতে সে-তো ছিলো চিরবন্দী;
সন্ধি ছিলো একাকীত্বের সাথেই অবিকার।
মগজের নিউরনে নিউরনে গিয়েছিলো গেঁথে-
এইতো জীবন! এক নিয়তির খেলা,
অবহেলা করে পার পাওয়া যাবে না কখনো,
ভেবেছিলো এ রকম মানসিকভাবে।
একদিন ভবিষ্যতে দেখা হবে অতীতের সাথে,
আত্মগ্রাসী বর্তমান সেদিন তোমাকে দেখাবে
নক্ষত্রের মতো চিরন্তন উজ্জ্বল সত্যকে।


একদিন উদারচেতা মানুষের মতো সরল ধবল প্রাণে
বন্ধুত্বের হাত অকৃপণে প্রসারিত করে দিয়েছিলাম তারে,
বন্ধু ভেবে কাছে টেনে।
কুয়োর বন্দীদশার ব্যাঙের জীবন থেকে
তুলে আনি তারে উদার আকাশের নিচে;
রঙময় আলোতে ঝলমলিয়ে উঠে অনন্য আকাশ।
আকাশের বিশালতা দেখে
চমকিয়া উঠেছিলো কি সে বিহ্বলতা নিয়ে ,
চেতনায় পর্যুদস্ত কুয়োর দাদুরি?


ঘন অন্ধকারে থেকে বুঝি তার মন
হয়েছে ভীষণ কালো অন্ধকার,
লোভের লালসা ক্রমশই গ্রাস করে তারে।
অতঃপর, স্বরূপে আবির্ভূত হয় সেই অন্ধকারে,
ভুলে যায় বন্ধুত্বের দায়বদ্ধতা স্বীকার করার কৃতজ্ঞতা।
এখন প্রখর ধুরন্ধর!
স্বার্থবাদী উৎসবে মেতে উঠে অন্যরকম সুরে,
কথা বলে বিবিধ ভনিতায়।
বন্ধুত্বের মাপকাঠিতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে
মেতে উঠে অন্য ধরণের এক আলোর উঠোনে;
অবসরে সময় কাটায়, সে-ই পরম বন্ধুর ছিদ্রান্বেষণে।
তাই, এখন শুকনো পাতার পতনের শব্দে ভয় পাই,
যে কোন সময় তীব্র দাবানল জ্বেলে দিতে পারে সে।


হায়!
তবে, তারে কি বলা যায়?
হৃদয়টা যার হীন, সে তো স্বার্থবাদী অর্বাচীন!
ভগ্ন হৃদয়ের একজন-
অকৃতজ্ঞের চেতনা করিছে বহন।


২৬/১২/২০১৮
মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা।