প্রাণের প্রিয়তি! কি এমন ক্ষতি, হও যদি ভালোবাসা!
অটুট বাঁধনে রাখবো তোমারে এই  ছিলো মনে আশা।
চাঁদনি রাতের গহীন প্রহরে এলে তুমি অপরূপা,
এলোচুলে তবে বেঁধে দেবো আমি মদনমোহিনী খোঁপা।
'কূরীর-কুম্বা' খোঁপাগুলো হবে হীনতর তার চেয়ে,
অনিন্দ্য সেই দীঘল কেশের সুরভীতে যাবে ছেয়ে।
হও যদি তুমি টলটলে জলে প্রেমের অন্তরীপ,
নিমেষেই আমি আহ্লাদে হবো কপালের লাল টিপ।
চাঁদের আলোক ছড়াবো জগতে চির উজ্জ্বল হয়ে,
লাইলী-মজনু, শিরি-ফরহাদে চেয়ে রবে বিস্ময়ে।
যদি করো তুমি অযুত প্রেমের আকাশ রাঙানো দাবী,
হয়ে যাবো আমি তোমার নাকের অপরূপ নাকছাবি।
ঝলমল করে ছড়াবো জ্যোতিকে নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে,
জড়িয়ে ধরবো পরানের তলে পরমের বিশ্বাসে।
তুমি যদি হও আমার নয়নে পিরিতির অঞ্জন।
রাতের প্রহরে হবো যে তোমার ঠোঁটরাঙা রঞ্জন।
ওষ্ঠে ওষ্ঠে রাঙাবো ওষ্ঠ অষ্টপ্রহর ধরে,
সারা দিনমান জড়িয়ে থাকবো আমরা পরস্পরে।
যদি তুমি হও ধরণীর 'পরে রজনীগন্ধা ফুল,
তোমার কানের কানপাশা হবো, ঝুমকোলতার দুল।
দুলে দুলে আমি বলে যাবো শুধু ভালোবাসা ভালোবাসা,
এ জীবনে তুমি অলকঅমৃত তুলনাবিহীন খাসা।
রও যদি তুমি প্রেমের শিকলে আমার হৃদয়ে বন্দী,
নিলয় ছিঁড়িয়া রক্তে রক্তে পরাবো হাতে মেহেন্দি।
এঁকে দেবো তাতে কারুকার্যের বারোয়ারী ইতিহাস,
দীঘল নদী ও ফসলের মাঠ, কৃষকের বার মাস।
তুমি যদি হও চির বিরহীর অমলকান্তি প্রিয়,
জড়িয়ে ধরে হয়ে যাবো আমি তোমার অঙ্গুরীয়।
আকড়িয়া রবো তোমার আঙুলে পাহাড়ি ছড়ার মতো,
জলধারা হয়ে ঝরে যাবো নিতি অবিরাম অবিরত।
আমার আকাশে হও যদি তুমি ছেলেবেলাকার ঘুড়ি,
রিনিঝিনি বেজে হয়ে যাবো আমি বেলোয়ারী লাল চুড়ি।
অটুট বাঁধনে জড়িয়ে ধরবো আজন্ম কাল ধরে,
অরূপ তোমার রূপের বাহারে ঝলসিত অন্তরে।
সত্যি বলেছি প্রাণের প্রিয়তি এ নহে কভু যে মিছা,
প্রেমের পরশে হয়ে যাবো মেদহীন কোমরের বিছা।
জড়িয়ে ধরবো পরম আবেশে প্রেমের আবেগে ঠাসা,
তুমি যে আমার সাত জনমের প্রিয়তির ভালোবাসা।
তুমি যদি করো প্রশান্তময় আমার তপ্ত দুপুর।
ছন্দে ছন্দে বেজে উঠে হবো তোমার পায়ের নূপুর।
আনন্দধারা ছড়িয়ে দেবোই মন্দ্র ছন্দ তালে,
বলবে সকলে আমরা এসেছি সুদূর অনাদি কালে।
তুমি যদি হও অতুল সুরের মোহনরাগিণী বাঁশি
বেনারসী হয়ে জড়িয়ে ধরবো, বলবো যে ভালোবাসি।
নিঙড়িয়ে নেবো রূপের বাহার অঙ্গে অঙ্গ চষে,
আমরা এসেছি ধরণীর মাঝে প্রেমের রঙ্গরসে।


১৫/১১/২০১৯
মিরপুর,ঢাকা।