ছেলেবেলার কথাগুলো বলবো আমি আজি,
একটু বসো কাছে এসে শুনতে যদি রাজি।
নদীর পাড়ের একটি গাঁয়ে ছিলো বসত-বাটি,
সন্ধ্যা হলেই পড়তে হতো বিস্তারিয়া পাটি।
সন্ধ্যা কখন বুঝতে হতো মুরগী গেলে ঘরে,
ওজু করে ঝুঁকে যেতাম বই খাতার ’পরে।
পশ্চিম দিক কালো হলেই রাত আসতো নেমে,
ঘুমের পরী চোখে এসে হাত বুলাতো প্রেমে।
ঘুম কাতুরে চোখের পাতা পাথর-ভারী হয়ে,
ঘুমিয়ে যেতাম খাতা কলম পাটির উপর থুয়ে।


পূবাকাশে থালার মতোন সূর্য ওঠতো যখন,
ঘুমগেুলো সব পালিয়ে যেতো লজ্জা পেয়ে তখন।
মুড়ির ভান্ড উজার করে কোছর ভরে নিয়ে,
খেতাম খুবই মজা করে পুকুর পাড়ে গিয়ে।
ক্ষানিকটা রোদ চড়া হলেই গোসল করার তরে,
দল বান্ধিয়া গাঙে যেতাম সবাই কলস্বরে।
লুঙ্গিখানি পাড়ে রেখে ঝাপিয়ে পড়ি জলে,
ঘন্টা ক্ষানিক ঝাপাইতাম লাই-ডুবানির ছলে।
কোকিল রাঙা নয়ন নিয়ে বাড়ি ফিরে এসে,
দেখি ভাতের থালা নিয়ে আম্মা আছেন বসে।
কোন রকম নাকে মুখে নাস্তা সাবার করে,
বই-খাতা লই' বিদ্যালয়ে ছুটে যেতাম জোরে।


ছুটির ঘন্টা বেজে উঠলে ফিরে এসে বাড়ী,
জননী যা পাতে দিতো খেতাম তাড়াতাড়ি।
লাঠিম খেলা, ঘুড়ি ওড়ান, বৌ-ছোয়ানী খেলা,
যেটা যখন ইচ্ছে হতো খেলে যেতাম ম্যালা।
সন্ধ্যা হলেই বাড়ী ফিরে গতকালের মত,
প্রতিদিনই একই রকম কাটতো অবিরত।