ফজরের নামাজের পর একদিন- আমার মা-
তীব্র বৃষ্টিতে শ্যাতলা পড়া তাকের উপর থেকে
             গেরুয়া রংয়ের গিলাফে ঢাকা
কোরান শরিফখানি যত্নে তুলে আনে-
একটি ফুল আর একটি মোমবাতি
একই সঙ্গে ধরা যেনো কিশোরীর হাতে।


আশ্চার্য নীল তাঁর চোখের জ্যোতি-
এখনি সুর করে পড়বে- সমুদ্রের জলের গান;
এখনি সুর করে পড়বে- শিশির পতনের সঙ্গীত;
এখনি সুর করে পড়বে- অরুণ কণার লহরীর কলকথা।


আমার লক্ষী বাবা রেগে ঢং
ভোরের মোলায়েম রোমাঞ্চ স্পর্শহীনতায়;
আদুরে বিড়াল ছানার মতো গুটিশুটি শুয়ে রয়।


মিষ্টি স্বপ্নের মতো মা আমার
ধীরে ধীরে কোরানের পাতা উল্টায়;
যেন গোলাপের পাপড়ি উল্টিয়ে যাচ্ছে সযতনে।
অশ্বত্থ বনে বিজলীর ঝলক ছড়িয়ে পড়ছে তাঁর চোখে মুখে,
মনে হয়- স্বর্গের অপ্সরী নিমগ্ন আপন চেতনবিদ্ধতায়।


আমি চেয়ে আছি গোরস্থানের বাঁশঝাড়ের দিকে
             জানালার ফাঁক গলে দেখি -
বাঁশপাতার অগ্রভাগে অপেক্ষা করছে তিনটি শিশির ফোঁটা,
বড়ো মূল্যবান স্মৃতি- সে-ই শিশির বিন্দু।


কখন ঝরে গেছে  দু’টি ফোঁটা সময়ের প্রবল ছোঁয়ায়;
এখন আমি একা আছি শিশিরের স্মৃতিময়তায়।