দূরে কুয়াশার নিচে বসে আছো তুমি;
রজত তরল শুভ্র প্রেমের চাঁদ আকাশে পাল তোলে;
আমি বসে আছি লতায় পাতায় আচ্ছাদিত
আমাদের জট-জড়ানো জীবনের মতো সেতুটার উপর;
দোদুল কাঁপছে সেতুটা -আমি নিশ্চুপ।


কোথাও কৃষক-কৃষানীর গান শোনা যায়;
নবান্নের উৎসব- এই চান্নি পসর রাইতে সারারাত চলবে।
ধানের খোসা ছাড়ানো চালের মিষ্টি সুবাস,
ঘুমহারা কিশোরীদের ইনিয়ে বিনিয়ে কলকথা
উন্মাতাল করে আমার চেতনবিদ্ধতাকে।


তোমার আর আমার মাঝখানে ঝুঁকে আছে
বুড়ো অশ্বত্থ বাদামী গাছটা ঋজু দৃঢ়তায়।
আমি কাছেই যেতে পারি না তার,
বাঁকানো গাছটা কাঁদে- কী জমকালো সে সুর!
আমার অসীম দুঃখের গহীন সহচর এই বৃক্ষ।


আমাদের শেষ বিদায়ে শিশির ঝরেছিল অজস্র;
একটি সুন্দর বাটিতে পুরোনো দুঃখগুলো তুলে দিলে,
হাত বাড়িয়ে নিলাম- বড়ো মূল্যবান স্মৃতি;
সাজাবো তাতে কষ্টের বেদনাহত নীল অপরাজিতা;
অতঃপর রোমন্থনে তুলে আনব সুখের স্মৃতিময়তা।


শ্যাতলা পড়া সমাধির ’পরে
একদিন লিখে দিও তুমি গাঢ় অক্ষরেঃ
‘কী আশ্চর্য নীল ছিলে তুমি’
প্রত্যহ ভোরের আলোকে দেখবে সে-ই রূপ;
আমাকেই পাবে তরুণ আলোর শিশিরের ভেতর।