এ বিশাল 'মেঘনা সরোবরের' দ্বিতীয় তলার
দখিনের বারান্দায় বিকেল বেলায় বসে আছি,
দেয়ালের তারকাটার উপর কিছু পাখি দেখি-
কালো কুচকুচে ফিঙে, এই বসে আর এই ওড়ে,
উড়ন্ত খাবার নিয়ে যথাস্থানে ফিরে আসে ফের।
সাদা কালো মিশেল কয়েকটি চন্দ্রমূখী শালিক,
বাদামী ভাত-শালিক তাদের সাদা পালক ঢেকে
জুবুথুবু বসে রয় একসাথে জোড়ায় জোড়ায়;
দুইটি দোয়েল পাখি লাফিয়ে লাফিয়ে হেঁটে যায়-
ঘাসের গোঁড়ায় খুঁজে ফিরে জীবন্ত পোকা-মাকড়।


কয়েকটি কানি বক সার বেঁধে বসে আছে দূরে,
কিসের শব্দে হঠাৎ উড়ে যায় ক্ষাণিক পশ্চিমে
সাদা পালক মেলে, ফের বসে সবুজের চাতালে;
দূরে ঘন সবুজের কালচে গ্রামের গাছগুলো
জড়াজড়ি করে দাঁড়িয়ে আছে পরম মমতায়।
অস্পষ্ট শব্দ ভেসে আসছে কৃষানীর হাকডাক-
অবোধ শিশুকে বাগে আনার অদ্ভুত শব্দাবলি।
দিবসের শেষ কাজ করে যায় কৃষকের দল,
ভালোবাসার ধানের চারায় নিড়ানোর সোহাগ,
সবল সতেজ ফলবতি করার তীব্র ইচ্ছায়।


কিছুক্ষণ পূর্বেই বৃষ্টি হয়ে গেলো এই তল্লাটে,
নিরাগ জমিতে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টির পবিত্র জল
ফোঁটায় ফোঁটায় জমে আছে কালো বিদ্যুতের তারে;
কালো সুতোয় স্ফটিক মুক্তোর মালা যেমন করে
গেঁথে থাকে, তেমনি দু'টি থামের মাঝে ঝুলে আছে।
বিমুগ্ধ দুই চোখ অপলক চেয়ে রয় দিগন্তে;
দ্বিতীয় গ্রামের পরে নেমেছে আকাশের কিনারা,
চেয়ে আছি- এই আমার দেশ- প্রাণের বাংলাদেশ।


১০/০৮/২০১৩
বদরপুর, চাঁদপুর।